ছবি: সংগৃহীত।
সিলেটের জাফলং পর্যটনকেন্দ্র ও টাঙ্গুয়ার হাওরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনস্থল ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। চোখের সামনে সেন্ট মার্টিনও নষ্ট হয়েছে। তাই দেশের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর টেকসই উন্নয়নের জন্য পর্যটক নিয়ন্ত্রণসহ কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাতের বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে বক্তৃতা ও পরামর্শ প্রদান করা হয় বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ট্যুরিজম অ্যালায়েন্স সোসাইটি আয়োজিত ‘পর্যটন ও টেকসই রূপান্তর: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে।
অনুষ্ঠানটি রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নুজহাত ইয়াসমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান সায়মা শাহীন সুলতানা। উভয়েই পর্যটন খাতের উন্নয়নে বেসরকারি উদ্যোগের সঙ্গে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্যুরিজম অ্যালায়েন্স সোসাইটির সভাপতি এইচ এম হাকিম আলী।
সেমিনারে সহসভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, ‘দুই দশক আগের জাফলং আর বর্তমান জাফলংয়ের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। সেন্ট মার্টিন ধ্বংসের উদাহরণ আমাদের সতর্ক করছে। পরিবেশ সংরক্ষণ ছাড়া টেকসই পর্যটন সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওর প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সুন্দরবনও একই পথে রয়েছে। তাই এখনই পর্যটনকেন্দ্র রক্ষায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা জরুরি।’
সেন্টার ফর ট্যুরিজম স্টাডিজের চেয়ারম্যান জামিউল আহমেদ বলেন, ‘গত ৫৫ বছরে দেশের পর্যটন খাতে কোনো তথ্যভান্ডার বা গবেষণা তৈরি হয়নি। পৃথিবীতে পর্যটনের নিয়ম রয়েছে, কিন্তু দেশে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ইচ্ছায় এটি পরিচালিত হচ্ছে।’
এছাড়া টুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান অ্যাডভেঞ্চার এসকেপ এশিয়ার প্রধান নির্বাহী সৈয়দ গোলাম কাদের বলেন, ‘প্রয়োজনে সরকারি সব ধরনের পর্যটনসংক্রান্ত অনুষ্ঠান বর্জন করতে হবে। দরকার হলে সরাসরি রাস্তায় নামতে হবে।’
বেঙ্গল ট্যুরসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ হোসেন বলেন, ‘টাঙ্গুয়ার হাওরে বর্তমানে প্রায় ১,৬০০ নৌকা চলছে, যার মধ্যে ৫৫০টি এসি। সুন্দরবনে ২০০ জাহাজ যায়। এভাবেই সেন্ট মার্টিন ধ্বংস হয়েছে।’
সেমিনারে দেশের পর্যটন খাতের বিশাল সম্ভাবনা তুলে ধরা হয়। বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয় টেকসই চর্চা, ইকো ট্যুরিজম এবং সরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাত ও স্থানীয় অংশীদারদের যৌথ সহযোগিতার ওপর।
বক্তারা প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের গুরুত্বও পুনর্ব্যক্ত করেন।