ছবি: সংগৃহীত।
সরকারি মালিকানাধীন যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ফতুল্লা ডিপো থেকে দুই দফায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার লিটার ডিজেল উধাও হয়েছে।
জ্বালানি তেলের এ চুরির ঘটনায় কোম্পানির অভ্যন্তরীণ অনিয়ম ও তদারকির দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
সূত্র জানায়, গত জুনে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইনের মাধ্যমে সরাসরি তেল সরবরাহ চালু হয়। এরই মধ্যে ফতুল্লা ডিপোর ২২ ও ২৩ নম্বর ট্যাংক থেকে এ বিপুল পরিমাণ তেল গায়েব হয়।
কোম্পানি ও ডিপো সূত্র বলছে, ট্যাংকের সক্ষমতা কমিয়ে দেখানোর মাধ্যমে চুরি সংঘটিত হয়েছে। ট্যাংকে তেলের গভীরতা মাপার সময় মাত্র ২ মিলিমিটার পার্থক্য দেখালেই এক হাজারের বেশি লিটার তেল হিসাবের বাইরে চলে যায়। ট্যাংকের মজুত ক্ষমতা কৃত্রিমভাবে কম দেখানোর কারণে প্রকৃতপক্ষে বাড়তি তেল থেকে যায়, যা পরে বাইরে বিক্রি হয়।
ফতুল্লা ডিপোর সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজ করেছে খুলনার ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এস এম নুরুল হক। তাদের দেওয়া প্রতিবেদনে ২০১৮ সালের তুলনায় এ বছর ট্যাংকের ধারণক্ষমতা কম দেখানো হয়েছে প্রায় ৬০ হাজারলিটার।
প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী আন্দালিব বিন হক বলেন, ১ শতাংশ তারতম্য হতে পারে, তবে ৬০ হাজার লিটার পার্থক্য হয়তো মুদ্রণজনিত ভুল।
যমুনার অপারেশন বিভাগের এক চিঠিতে বলা হয়, প্রথম দফায় ২৪ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত সরবরাহকৃত তেল থেকে ঘাটতি হয়েছে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮০৪ লিটার। দ্বিতীয় দফায় ১৪ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঘাটতি হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার। মোট ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৫ হাজার লিটার।
ঘটনার পর ট্যাংকের সক্ষমতা পুনরায় যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছে যমুনা অয়েল কোম্পানি। পাশাপাশি ৬ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাতে পাইপলাইন কোম্পানির একজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।
কমিটির সদস্য এজিএম (ইএন্ডডি) মো. আলমগীর আলম জানান, তারা ডিপো পরিদর্শন করেছেন এবং এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন।
যমুনার একাধিক কর্মকর্তা মনে করছেন, সক্ষমতা যাচাইয়ে এত বড় পার্থক্য স্বাভাবিক নয়। চুরি করার উদ্দেশ্যে মজুত ক্ষমতা কম দেখানো হয়েছে।
তাদের দাবি, শুধু ট্যাংক নয়, কিছু ট্যাংকলরির সক্ষমতাও কমিয়ে দেখিয়ে একইভাবে তেল বাইরে বিক্রি করা হচ্ছে।
তারা বলেন, ‘যমুনা নিজেরাই তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বের হবে না। এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বা জ্বালানি বিভাগকে স্বাধীন তদন্ত করতে হবে।’