ছবি: ইমজা নিউজ
গুম-খুনের ডকুমেন্টারির চিত্রায়ণে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বর্তমানে সিলেটের তামাবিল সীমান্তে অবস্থান করছেন।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সকালের ফ্লাইটে সিলেট আসার পর তামাবিল সীমান্ত এলাকায় যান। তিনি সেই স্থান পরিদর্শন করেন, তাকে যে পথ দিয়ে গুম করে ভারতে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তার গুমের ঘটনা নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
সেখানে চিত্রায়ণের এক ফাঁকে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাকে যেদিন বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছিল, তখন তো আমি জানতাম না যে আমাকে বর্ডার ক্রস করানো হবে। আমি জানতাম, আমাকে কোথাও নিয়ে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে, বা কোথাও নিয়ে ফেলে দেওয়া হবে বনেজঙ্গলে। তো সেরকম অনুভূতিতেই ছিলাম। যখন আমাকে বর্ডার ক্রস করে, হয়তো এই রাস্তা (তামাবিল) দিয়েই হবে, আমার কাছে যেটুক মনে হচ্ছে, আমিও তা অনুভব করেছি।’
তিনি বলেন, ‘যখন আমাকে শিলংয়ে চোখ বন্ধ অবস্থায়, হাত বন্ধ অবস্থায় শিলং নিয়ে গেলো, যে পর্যায়ে আমাকে ছেড়ে দেওয়ার একটু আগে আমার চোখের বন্ধনীটা খুলে ফেলল, তখন আমি দেখলাম যে, আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তখন মনে হচ্ছিল হয়তোবা আমাকে এই দেশে (ভারতে) ছেড়ে দেবে, তখন যে জায়গায় ছেড়ে দিলো তখন আমি পথচারির মাধ্যমে পুলিশকে খবর দিলাম। পুলিশ যখন আমাকে নিয়ে গেলো তখন আমার মনে হলো- আমি বেঁচে আছি।’
শিলংয়ে নিজেকে আবিস্কার করার পরবর্তী তিক্ত অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তারপর আমাকে যখন মেন্টাল হসপিটালে নিয়ে গেলো তখন আমার কাছে মনে হলো এখানে আমি হয়তো পাগলের মতো হয়ে মারা যেতে পারি।’
২০১৫ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় তাকে এই পথে ভারতের শিলং নেয়া হয় বলে দাবি করেন সালাউদ্দিন।
উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম খুন নিয়ে ডকুমেন্টারি করা হচ্ছে। সেই ডকুমেন্টারির অংশের শ্যুটিং এ অংশ নিতে তিনি তামাবিল সীমান্তে যান।
২০১৫ সালের ১০ মার্চ গুম হওয়ার ৬৩ দিন পর তাকে ভারতের শিলং-এ পাওয়া যায়। শিলংয়ে আইনি জটিলতা ও মামলা মোকাবেলা করার কারণে তিনি প্রায় নয় বছর অবস্থান করেন।
দেশে ফেরার পথ সুগম হয় ৫ আগস্ট, শেখ হাসিনার পতনের পর ৬ আগস্ট তিনি ভ্রমণ অনুমোদন বা ট্রাভেল পাস পান। ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফিরেন।