প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:১৯ (বুধবার)
টাইফয়েড প্রতিরোধে দেশের প্রথম জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি শুরু

ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সারাদেশে টাইফয়েড প্রতিরোধে জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এ টিকার আওতায় আনা হবে।

রোববার সকালে ঢাকার আজিমপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানা কেন্দ্রে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। আগামী এক মাস সারাদেশে বিনামূল্যে ইনজেক্টেবল টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নূরজাহান বেগম বলেন,‘আমাদের দেশে এখনও শিশুরা টাইফয়েডে মারা যায়, এটা লজ্জার বিষয়। যেমন আমরা ডায়রিয়া ও রাতকানা প্রতিরোধে সফল হয়েছি, ইনশাআল্লাহ এবার টাইফয়েডও প্রতিরোধ করতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘রোগ প্রতিরোধ এখন সরকারের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার। যত বেশি শিশু টিকার আওতায় আসবে, তত কমবে হাসপাতালের ভিড় ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। টাইফয়েড এমন একটি রোগ, যা সচেতনতা ও টিকাদানের মাধ্যমে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রতিটি শিশুর কাছে টিকা পৌঁছে দিতে পারলে টাইফয়েডজনিত মৃত্যুর ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব হবে।’

অনুষ্ঠানে সমাজকল্যাণ ও নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন,

‘এটা শুধু একটি স্বাস্থ্য প্রকল্প নয়, বরং বাংলাদেশের শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষার ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। টাইফয়েড দীর্ঘদিন ধরে এক নীরব বিপদ ছিল, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের পরিবারের শিশুদের জন্য। এই কর্মসূচি সেই জায়গায় বড় পরিবর্তন আনবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) তথ্যানুসারে, জন্মনিবন্ধন না থাকলেও সব শিশু এই টিকার আওতায় আসবে।

জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহৃত হচ্ছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি টিকা, যার সরবরাহে সহযোগিতা করছে আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্যাভি (Gavi -The Global Alliance for Vaccines and Immunization)।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হার আরও কমবে এবং টাইফয়েড পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের পথে বড় অগ্রগতি অর্জিত হবে।