ছবি: সংগৃহীত।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল সোমবার জেরুজালেমে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট (নেসেট)-এ দেওয়া দীর্ঘ ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, জালিয়াতি, ঘুষ ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ইসরায়েলে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে।
নেসেটে প্রায় এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে উদ্দেশ করে বলেন,
‘আমার একটা ভাবনা আছে। প্রেসিডেন্ট, আপনি কেন তাঁকে (নেতানিয়াহু) ক্ষমা করে দিচ্ছেন না? সিগার আর শ্যাম্পেইন-এসব নিয়ে কারও কি এত মাথাব্যথা আছে?’
ট্রাম্পের এই মন্তব্যে সংসদে উপস্থিত অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেন।
২০১৯ সালে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করা হয়। তার মধ্যে একটি মামলায় অভিযোগ ছিল, তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২ লাখ ১০ হাজার ডলার মূল্যের সিগার ও শ্যাম্পেইন উপহার নিয়েছিলেন।
২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। তবে গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে এ বিচার একাধিকবার স্থগিত হয়েছে। এখনো কোনো মামলার রায় হয়নি।
নেতানিয়াহু শুরু থেকেই অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আসছেন। তিনি দাবি করেছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের পদটি মূলত আনুষ্ঠানিক, তবে আইন অনুযায়ী তিনি বিশেষ পরিস্থিতিতে কোনো অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
ট্রাম্পের বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গই উঠে আসে। তিনি বলেন, ‘নেতানিয়াহুর মতো একজন নেতার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ টিকতে পারে না। এটা সময় নষ্ট ছাড়া কিছু নয়।’
এটাই প্রথম নয়, এর আগে গত জুনেও ট্রাম্প নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলা বিচারপ্রক্রিয়া বাতিলের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি তখন এ বিচারকে ‘বামপন্থীদের রাজনৈতিক হয়রানি’ বলে আখ্যা দেন এবং বলেন,‘একজন নির্বাচিত দক্ষিণপন্থী নেতাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র চলছে।”
গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে গাজায় চলা যুদ্ধ এবং তীব্র রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই নেতানিয়াহুর বিচারপ্রক্রিয়া চলছে।
সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের অবসান ঘোষণা করে ট্রাম্প ইসরায়েল সফরে আসেন। তার ভাষণ চলাকালে পার্লামেন্টে কয়েক দফা হট্টগোলের ঘটনাও ঘটে।
ইসরায়েলের পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের ‘নেতানিয়াহুকে ক্ষমা করার আহ্বান’ আন্তর্জাতিক মহলে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। একদিকে নেতানিয়াহুর বিচারপ্রক্রিয়া ঝুলে আছে বছরের পর বছর, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে-এটি কি কূটনৈতিক সহানুভূতি, নাকি রাজনৈতিক বার্তা?