ছবি: ইমজা নিউজ
ঢাকঢোল পিটিয়ে সিলেট রেলওয়ে স্টেশনে ‘অভিযান’ চালালেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সারওয়ার আলম। সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি স্টেশনে গিয়ে পরিদর্শন করেন সার্বিক অবস্থা। সেই সময় পুরো স্টেশন ছিল ছিমছাম, পরিপাটি। স্টেশনে দেখা যায় না কোনো কালোবাজারি বা বিশৃঙ্খলার দৃশ্য। কর্মকর্তারাও জানালেন, “সিলেটে টিকিট কালোবাজারি নেই।”
তবে বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে। যাত্রীরা জানাচ্ছেন, নিয়মিত ট্রেনযাত্রীরা জানেন, টিকিট পাওয়া আজও কষ্টকর। অনলাইনে টিকিট না মেলে, অফলাইনেও পাওয়া যায় না। বাধ্য হয়ে সাধারণ মানুষকে কালোবাজারিদের কাছ থেকেই টিকিট কিনতে হয়, তাও বাড়তি দামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্টেশনের কিছু অভ্যন্তরীণ লোকজনের সহযোগিতায় এই সিন্ডিকেটের কারসাজি চলে নির্বিঘ্নে।
পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলম বলেন,
'এখন টিকিট অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে, তারপরও কীভাবে কালোবাজারি হয়, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব। স্টেশনের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী এতে জড়িত কি না, সেটিও খতিয়ে দেখা হবে। কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'কিছু কালোবাজারি একাধিক অনলাইন অ্যাকাউন্ট খুলে মুহূর্তেই অনেকগুলো টিকিট সংগ্রহ করছে। এটি এক ধরনের কারসাজি, অনৈতিক কাজ। এই কার্যক্রম বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
জেলা প্রশাসক জানান, যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে শিগগিরই বিশেষ কোচ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি স্টেশনের নিরাপত্তা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে যাত্রীরা ছিনতাই বা অন্য অপরাধের শিকার না হন।
তিনি পরিদর্শনের সময় স্টেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যাত্রীসেবার মান ও রেলওয়ে কর্মকর্তাদের কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের সমস্যা ও পরামর্শও শোনেন তিনি।
পরিদর্শনকালে সিলেট রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
তবে জেলা প্রশাসকের এই সফরকে অনেকে বলেছেন 'দেখানো অভিযান'। কারণ, আগে থেকেই স্টেশনে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হয় এবং কালোবাজারিদের দেখা মেলে না। কিন্তু অভিযান শেষে পুরনো চিত্রই ফিরে আসে, যাত্রীদের টিকিট না পাওয়া, আর কালোবাজারিদের দাপট।
যাত্রীদের প্রশ্ন: 'অভিযান শেষে কি বদলাবে কিছু?'