প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১১:১২ (বুধবার)
সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শহীদ মিনার ভেঙ্গে নির্মাণ হচ্ছে স্মারকস্তম্ভ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত।

 প্রায় ৬০ বছর আগে নির্মিত হয় সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের ঐতিহাসিক শহীদ মিনার। যেখানে একসময় শিক্ষার্থীরা ভাষাশহীদদের স্মরণে ফুল দিতেন, কবিতা পড়তেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতেন-সেই শহীদ মিনার ভেঙ্গে  নির্মাণ করা হচ্ছে একটি নতুন স্মারকস্তম্ভ।

ঘটনাটি জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার কলেজ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষের কাছে শহীদ মিনার ভাঙার প্রতিবাদে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। আজ বুধবার একই দাবিতে মানববন্ধনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগরে ১৯৪৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি ১৯৮০ সালে সরকারীকরণ করা হয়। ২০২০ সালে কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসবের স্মৃতি ধরে রাখতে একটি স্মারকস্তম্ভ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সম্প্রতি কাজ শুরু করে।

তবে শহীদ মিনার ভাঙার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর এখন দায় একে অপরের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাজ, অন্যদিকে অধিদপ্তর বলছে, স্থানের নির্দেশ কলেজ থেকেই এসেছে।

,সাবেক ছাত্ররা জানান, ১৯৬৬ সালে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়েছিল এই শহীদ মিনার। এটি ছিল জেলায় ভাষাশহীদদের প্রথম স্মারক। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী এটি ভেঙে ফেলে, মুক্তিযুদ্ধের পর শিক্ষার্থীরাই আবার গড়ে তোলেন। কলেজে এত জায়গা থাকতে কেন শহীদ মিনারের ভেতরেই স্মারকস্তম্ভ, তা বোঝা যায় না। এতে আমরা মর্মাহত।’

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, ‘স্মারকটির নাম ‘সুনাম ফলক’। এটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকা। কলেজ কর্তৃপক্ষই স্থান নির্ধারণ করেছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল প্রধান ফটকের পাশের এলাকায় এটি নির্মাণের, কিন্তু কলেজ রাজি হয়নি।’ তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং আপাতত কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এটি শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর করছে, স্থান নির্ধারণও তারাই করেছে।; তবে পরে তিনি নিজেই স্বীকার করেন, ‘আমরাই বলেছি, এখানে কাজ করা যাবে কি না। তারা রাজি হওয়ায় কাজ হয়েছে। এখন অনেকে কথা বলছেন। আমি ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে নই, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রকৌশলীর সঙ্গে আবার কথা বলব।’