প্রকাশিত : ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:০৭ (বুধবার)
আলফু মিয়া চেয়ারম্যানের রিমান্ড শুনানিতে সাংবাদিকের উপর হামলা, মোবাইল ছিনতাই

ছবি: সংগৃহীত।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদা পাথর লুটপাট মামলার অন্যতম আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা আলফু মিয়া এবং তার পুত্র আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট আদালত প্রাঙ্গণে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এদিন সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে আলফু মিয়ার রিমান্ড শুনানি চলছিল। খবর সংগ্রহ করতে সেখানে যান স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক, যার মধ্যে ছিলেন ইমজা নিউজের সাংবাদিক নয়ন সরকার এবং সাংবাদিক বৃত্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিমান্ড শুনানির সময় আলফু মিয়া পুলিশের সামনেই সাংবাদিক নয়নের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। একইসঙ্গে তার পুত্র সাংবাদিক বৃত্তের হাতে থাকা ক্যামেরা কেড়ে নেন। পরে নয়নের সহকর্মীরা তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হয়।

এসময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে থাকলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিক নয়ন সরকারের অভিযোগ, ‘আমি খবর সংগ্রহ করছিলাম। হঠাৎ আলফু মিয়ার ছেলে আমার উপর হামলা করে। এরপর পুলিশের সামনেই হাতকড়া পরা অবস্থায় আলফু নিজেই আমার মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়।’

ঘটনার পর নয়ন সরকার বিষয়টি সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন। 

সিনিয়র সাংবাদিক ও আইনজীবী ময়নুল হক বুলবুল বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, “৩টি হত্যা মামলাসহ বহু মামলার আসামী সাদাপাথর লুটের অন্যতম হোতাকে কোর্টে এভাবে হাত খোলা অবস্থায় কিভাবে আনা হলো? আইন অনুযায়ী, এমন আসামীকে অবশ্যই ডান্ডাবাঁধা অবস্থায় কোর্টে আনা হয়। আলফু চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রে কেন এটি করা হয়নি, তা আমাদের জন্য বিস্ময়ের বিষয়।”

তিনি আরও বলেন, ‘দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটি সংবাদ সংগ্রহের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। পুলিশি দায়িত্ব পালনে এ ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গ গ্রহণযোগ্য নয়।’

এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইক্রামুল কবির ইকু বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সাংবাদিকরা নিরাপদে সংবাদ সংগ্রহ করতে পারে।’

ঘটনাটি স্থানীয় সাংবাদিক মহলে গভীর ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব পালনে প্রশ্ন উঠেছে।

ইমজা নিউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যেই সাংবাদিকের ওপর হামলা ও মোবাইল ছিনতাই একটি ন্যক্কারজনক ও উদ্বেগজনক ঘটনা। তারা অবিলম্বে ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।