ছবি: সংগৃহীত।
বিনোদন জগতের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি এবার ধারণ করা হয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামে। ভাওয়াইয়া গানের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই জেলায়, ১৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয় এবারের পর্বটি।
বরাবরের মতোই অনুষ্ঠানটি রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন কিংবদন্তি হানিফ সংকেত।
নব্বইয়ের দশক থেকে দেশের প্রান্তিক অঞ্চল, ইতিহাস ও সংস্কৃতির ভেতরে প্রবেশ করে অনুষ্ঠান ধারণ করে আসছে ইত্যাদি। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ফাগুন অডিও ভিশন দল বেছে নিয়েছে কুড়িগ্রাম- যেখানে প্রকৃতি, ইতিহাস, লোকসংস্কৃতি ও ভাওয়াইয়া সংগীত মিলেমিশে আছে এক অনন্য ঐতিহ্যে।
উত্তরাঞ্চলের প্রাণের সংগীত ভাওয়াইয়াকে ঘিরেই সাজানো হয়েছে এবারের সংগীত ও নৃত্যানুষ্ঠান অংশ। পর্বটির শুরুতে কুড়িগ্রামের কৃষ্টিকথা ও ইতিহাস নিয়ে মনিরুজ্জামান পলাশের কথায় পরিবেশিত হয় পরিচিতিমূলক গানটি, কণ্ঠ দিয়েছেন রাজিব ও তানজিনা রুমা, সুর করেছেন হানিফ সংকেত এবং সংগীতায়োজনে ছিলেন মেহেদী। স্থানীয় অর্ধশতাধিক নৃত্যশিল্পীর নৃত্য পরিবেশনার কোরিওগ্রাফি করেছেন এসকে জাহিদ।
ভাওয়াইয়া সম্রাট আব্বাসউদ্দীনের জনপ্রিয় গান ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’ নতুনভাবে পরিবেশন করেছেন সালমা আক্তার ও পূর্ণচন্দ্র রায়। পুরোনো সুর সংরক্ষণ রেখে গানটির নতুন সংগীতায়োজন করেছেন মেহেদী।
এ পর্বেও থাকবে কুড়িগ্রামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংগ্রামী মানুষের গল্প নিয়ে তথ্যভিত্তিক ও মানবিক প্রতিবেদন। এতে স্থান পেয়েছে মহারানী স্বর্ণময়ী, বীরপ্রতীক তারামন বিবি, জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বাড়ি এবং ঐতিহাসিক চিলমারী নদীবন্দর নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন।
বাংলাদেশ ভাওয়াইয়া একাডেমি ও প্রতিষ্ঠাতা ভূপতি ভূষণ বর্মাকে নিয়েও থাকছে একটি বিস্তারিত ফিচার, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে ভাওয়াইয়া সংগীত সংরক্ষণে তাঁর অবদান।
২০১১ সালের জুলাই মাসে প্রচারিত কুড়িগ্রামের কর্মোদ্যোগী যুবক আবদুল কাদেরের প্রতিবেদনটির ফলোআপও দেখা যাবে এবারের ইত্যাদিতে।
এ ছাড়া চরাঞ্চলের জীবন-জীবিকা, সম্ভাবনা ও সংগ্রাম এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে রিকতা আখতার বানু পরিচালিত বিদ্যালয়ের মানবিক প্রতিবেদনও থাকছে এই পর্বে।
ইত্যাদির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠান ধারণের দিন সকাল থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে কুড়িগ্রাম শহর ও আশপাশের অঞ্চল। দুপুরের পর থেকেই উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী স্কুলের মাঠে ভিড় জমতে থাকেন দর্শকরা। নির্ধারিত আসনের বাইরে হাজারো মানুষ রাস্তা, ছাদ ও গাছের নিচে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেন প্রিয় অনুষ্ঠানটির শুটিং।
এবারের পর্বে অংশ নিয়েছেন আবদুল আজিজ, সোলায়মান খোকা, আবদুল্লাহ রানা, সুভাশীষ ভৌমিক, জিল্লুর রহমান, মুকিত জাকারিয়া, আমিন আজাদ, শাহেদ আলী, আশরাফুল আলম সোহাগ, তারিক স্বপন, নিপু, আবু হেনা রনি, শাওন মজুমদার, সাবরিনা নিসা, জামিল হোসেন, রিমু রোজা খন্দকার, সাদিয়া তানজিন, সুজাত শিমুল, হানিফ পালোয়ান, নজরুল ইসলাম, সূচনা শিকদার, রাজীব সালেহীন, বেলাল আহমেদ মুরাদসহ আরও অনেকে।
নতুন এই পর্বটি প্রচার করা হবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে আগামী ৩১ অক্টোবর (শুক্রবার) রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর।