প্রকাশিত : ১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:০২ (মঙ্গলবার)
শিল্পকলায় ‘ডাকঘর’

ছবি: সংগৃহীত।

বিকেলের বৃষ্টি, ছুটির দিনের যানজট- তবু থামেনি দর্শকের পদচারণা। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালাকার মঞ্চস্থ করল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অমর নাটক ‘ডাকঘর’-এর শততম প্রদর্শনী।

এক যুগেরও বেশি সময় পর মঞ্চে ফিরেছে দলটির এই বহুল প্রশংসিত প্রযোজনা। বিকেল ও সন্ধ্যার দুটি প্রদর্শনীতেই ছিল দর্শকের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি। নাটক শেষে করতালির ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো মিলনায়তন।

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পালাকার ধারাবাহিকভাবে মঞ্চে এনেছে নানা ধ্রুপদি ও সমকালীন নাটক। রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর সেই যাত্রারই এক উজ্জ্বল অধ্যায়।

শততম প্রদর্শনীর আগে ১৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ৯৮তম মঞ্চায়ন, পরদিন বিকেলে ৯৯তম এবং শুক্রবার সন্ধ্যায় শততম প্রদর্শনী হয়ে ওঠে দলের জন্য এক আবেগঘন উদ্‌যাপন।

এই আয়োজনে দলের পুরোনো ও নতুন শিল্পীরা একসঙ্গে অংশ নেন প্রযোজনা, আলো ও সংগীতায়োজনে। ফলে সন্ধ্যাটা রূপ নেয় এক প্রজন্মের নাট্যকর্মীদের মিলনমেলায়।

অমল, মাধব, কবিরাজ, দইওয়ালা, রাজদূত- সব চরিত্র মিশে গেছে এক প্রতীকী বুননে। অমলের অসীমে মুক্তির টান আর মাধবের জীবনের আকুতি- এই দুই সত্তার টানাপোড়েনেই গড়ে উঠেছে নাটকের মূল সুর।

শেষ পর্যন্ত অমল পাড়ি দেয় মুক্তির পথে- নাটাই থেকে ছুটে যাওয়া এক স্বাধীন ঘুড়ির মতো।

পালাকারের প্রযোজনাটির নির্দেশনা দিয়েছেন শামীম সাগর। রবীন্দ্রনাথের ডাকঘর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট শরীরটার পানে বিরাট বিশ্ব-শরীরের আনন্দের টান কাজ করছে সব সময়- এই পূর্ণতার আকর্ষণই জীবনের চলন।’

প্রায় এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের উপস্থাপনায় ছিল নাচ, গান ও সংগীতায়োজনের প্রাণবন্ত সংযোজন। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন ফেরদৌসী শর্মী, চারু পিন্টু, আমিনুর রহমান, ফরহাদ লিমন, আশিকুজ্জামান প্রমুখ।

দর্শকদের করতালিতে শেষ হয় পালাকারের শততম ‘ডাকঘর’। একদিকে ছিল মুক্তির নাট্যরূপ, অন্যদিকে ছিল শিল্পীদের জীবনের এক পূর্ণতার অনুভব।