ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক জেপি মর্গান। প্রতিষ্ঠানটির বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৬ সালের শেষ প্রান্তিকে (চতুর্থ কোয়ার্টার) প্রতি আউন্স স্বর্ণের গড় দাম পৌঁছাতে পারে ৫ হাজার ৫৫ ডলারে।
জেপি মর্গানের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এই পূর্বাভাস নির্ভর করছে বিনিয়োগকারীদের বাড়তি চাহিদা ও বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় প্রবণতার ওপর। অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৬ সালে গড়ে প্রতি কোয়ার্টারে ৫৬৬ টন স্বর্ণ ক্রয় হতে পারে।
জেপি মর্গানের গ্লোবাল কমোডিটি স্ট্র্যাটেজির প্রধান নাতাশা কানেভা বলেন,‘স্বর্ণ এই বছরের জন্য আমাদের সবচেয়ে আত্মবিশ্বাসী বিনিয়োগ বিকল্প। ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমানোর চক্রে প্রবেশ করলে স্বর্ণের দামে আরও উল্লম্ফন দেখা যাবে।’
একই মত দিয়েছেন ব্যাংকের বেস ও প্রেশাস মেটাল স্ট্র্যাটেজির প্রধান গ্রেগরি শিয়ারার। তিনি বলেন, ‘ফেডের সুদ কমানো, স্থবির মুদ্রাস্ফীতি, ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ এবং মুদ্রার অবমূল্যায়ন-সব মিলিয়ে স্বর্ণের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করছে।’
ডলারের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাংকটি জানায়, বর্তমান বাজারে ‘ডি-ডলারাইজেশন নয়, বরং ডলার বৈচিত্রকরণ’ চলছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা ধীরে ধীরে মার্কিন সম্পদের পরিবর্তে স্বর্ণে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে স্বর্ণবাজারে যে সামান্য স্থিতিশীলতা বা পতন দেখা গেছে, তা ‘স্বাস্থ্যকর সংশোধন প্রক্রিয়া’ মাত্র। দ্রুত মূল্যবৃদ্ধির পর এটি একটি স্বাভাবিক ধাপ বলে মন্তব্য করেছেন তারা।
নাতাশা কানেভা বলেন,‘মূল্য এত দ্রুত বেড়েছে যে অনেকে আতঙ্কিত হচ্ছেন। কিন্তু বাজারে এখন ক্রেতা প্রচুর, বিক্রেতা প্রায় নেই। এটি দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের অনুকূল সময়।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২৮ সালের মধ্যে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৬ হাজার ডলার ছুঁতে পারে, এবং স্বর্ণকে স্বল্পমেয়াদি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে দেখা উচিত।
উল্লেখ্য, চলতি বছর স্বর্ণের দাম একাধিকবার রেকর্ড ভেঙেছে। সর্বশেষ সোমবার স্পট গোল্ডের দাম বেড়ে দাঁড়ায় প্রতি আউন্সে ৪,৩৮১.২১ ডলার, যা বছরের শুরু থেকে প্রায় ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি। ১৯৭৯ সালের পর এটিই স্বর্ণের সবচেয়ে শক্তিশালী বার্ষিক পারফরম্যান্স হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।