প্রকাশিত : ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ ১৯:৫৭ (বুধবার)
আবেদন ও পরীক্ষা ছাড়াই সরকারি চাকরি, দুদকের মামলার অনুমোদন

আবেদন না করেই এবং কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) বৈজ্ঞানিক সহকারী পদে চাকরি পেয়েছেন ৪২ জন ব্যক্তি- এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উদঘাটন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ঘটনায় বারির সাবেক মহাপরিচালকসহ ৪৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থার উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।

দুদক সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালে বারির বৈজ্ঞানিক সহকারী পদে ২০টি শূন্য পদে নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষার নম্বর, মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ও কোটা বিবেচনায় বাছাই কমিটি ১৮ জন প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই ১৮ জনকে বৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

কিন্তু পরবর্তীতে অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঐ ১৮ জন ছাড়াও আরও ৪২ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ জন লিখিত পরীক্ষায় অকৃতকার্য, ১৪ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও উত্তীর্ণ হননি, আর তিনজন তো চাকরির জন্য আবেদনই করেননি। অর্থাৎ, কোনো নিয়ম না মেনেই প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ৪২ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৎকালীন উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং তৎকালীন মহাপরিচালক ড. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল অবৈধ যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।

এ ঘটনায় মামলার আসামি করা হয়েছে বারির সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. রফিকুল ইসলাম মণ্ডল, সাবেক উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেআইনি উপায়ে নিয়োগ পাওয়া ৪২ জন বৈজ্ঞানিক সহকারীকে।

নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- মো. সেরাজুল ইসলাম, একেএম মুসা মণ্ডল, মো. মুকুল মিয়া, মো. নুরুল হাসান, সুয়ান কুমার দাস, মশিউর রহমান, মো. এনামুল ইসলাম, মামুন উর রশিদ, মো. হারুন-উর-রশিদ, মো. আবু সাঈদ ভূঁইয়া, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আরিফুজ্জামান, সামসুল আলম, জিএইচএম রায়হান কবির, মো. মামুনুর রশিদ, মো. ফরহাদ আহমেদ, মো. আবুজার রহমান, সনজিত কুমার বর্মন, প্রকাশ চন্দ্র সরকার, ফিরোজ আহমদ, মো. ফজলুল হক, মো. সরিফুল ইসলাম, মো. আল মাহমুদ পলাশ, মো. তোত মিয়া মণ্ডল, মেহেদী হাসান, মো. সবুজ বিশ্বাস, মো. সবুজ আলী, মো. মফিজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাসরিন নাহার, মো. হুমায়ুন কবির, মো. গোলাম সাকলাইন, মো. হেলুজ্জামান, তাজুল ইসলাম, মো. মোফাখখারুল আলম, মো. রাজিব হাসান, মো. আসাদ আলী, মোহাম্মদ আলী, সাবিনা ইয়াছমিন, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. রবলুল ইসলাম ও ফরিদুল ইসলাম।

বর্তমানে তারা দেশের বিভিন্ন গবেষণা কেন্দ্রে বৈজ্ঞানিক সহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন- যার মধ্যে রয়েছে সরেজমিন গবেষণা কেন্দ্র, উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, মসলা গবেষণা কেন্দ্র, কৃষি গবেষণা উপকেন্দ্র, বীজ প্রযুক্তি বিভাগ, আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট।