ছবি: সংগৃহীত।
ইতালিতে রেসিডেন্স পারমিট বা বসবাসের অনুমতিপ্রাপ্তদের মধ্যে শীর্ষ তিন দেশের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে বাংলাদেশিদের উপস্থিতি দ্রুত বেড়েছে।
ইতালির জনমিতি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কারিতাস মিগ্রান্তেস ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ৩৪তম অভিবাসন প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে ইতালিতে মোট ৫৪ লাখ বিদেশি নাগরিক বসবাস করছেন, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৯ দশমিক ২ শতাংশ। এর মধ্যে বাংলাদেশিদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। মাত্র দুই বছরে ইতালিতে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি প্রদেশে নতুন ইস্যু করা রেসিডেন্স পারমিটের ক্ষেত্রে বাংলাদেশিরা এখন শীর্ষ তিনের মধ্যে রয়েছে।
ইতালির ২ কোটি ৪০ লাখ কর্মীর মধ্যে প্রায় ২৫ লাখই বিদেশি, অর্থাৎ দেশটির মোট কর্মশক্তির প্রায় ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। শুধু ২০২৪ সালেই বিদেশিদের জন্য ২৬ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি নতুন চাকরির চুক্তি নিবন্ধিত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ বেশি। এসব নিয়োগের বেশিরভাগ হয়েছে উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব ইতালিতে, যেখানে বিদেশিরা কর্মশক্তির এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি।
শিক্ষা খাতেও বিদেশিদের উপস্থিতি বাড়ছে। ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে ইতালিতে ৯ লাখের বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেছে, যা মোট শিক্ষার্থীর ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।
ইতালিতে বসবাসরত বিদেশিদের মধ্যে রোমানিয়া, মরক্কো, আলবেনিয়া, ইউক্রেন ও চীনের নাগরিকরাই প্রধান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও পেরুর নাগরিকদের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কারিতাস- মিগ্রান্তেস জানায়, বিদেশি নাগরিকরা মূলত ইতালির মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে বসবাস করছেন, তবে অনিয়মিত অভিবাসীদের অবস্থান সারা দেশে ছড়িয়ে আছে, যাদের আবাসন পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত।
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, ইতালির নিম্নমুখী জন্মহার সামলাতে বিদেশি অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। ২০২৪ সালে জন্ম নেওয়া ৩ লাখ ৭০ হাজার শিশুর মধ্যে ২১ শতাংশের বেশি নবজাতকের অন্তত একজন অভিভাবক বিদেশি নাগরিক। একই বছরে ২ লাখ ১৭ হাজারের বেশি মানুষ ইতালির নাগরিকত্ব পেয়েছেন, যা দেশটির জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।
অভিবাসী শিশুদের অনেকেই ইতালিতেই জন্ম নিচ্ছে ও বড় হয়ে উঠছে ইতালীয় সমাজে। তবে নাগরিকত্ব না পাওয়ায় অনেকেই এখনো বৈষম্যের শিকার। বিদেশিদের উপস্থিতি ইতালির শহর ও গ্রামীণ এলাকায় স্কুল, সেবা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে বড় ভূমিকা রাখছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।