প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১৩:১৯ (বুধবার)
প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাসের কার্যক্রম আরও সহজ করা হবে - মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী

ছবি: সংগৃহীত।

মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী বলেছেন, প্রবাসীদের কল্যাণে দূতাবাসের কার্যক্রম আরও সহজ, দ্রুত ও জনবান্ধব করা হবে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সম্মেলন কক্ষে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি।

হাইকমিশনার বলেন, ‘সাংবাদিকরা প্রবাসী সমাজের চোখ ও কান। তাদের দায়িত্বশীল সংবাদ উপস্থাপন প্রবাসীদের বাস্তব চিত্র ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

সভায় সাংবাদিকরা প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা সমস্যা তুলে ধরেন-যেমন পাসপোর্ট নবায়নে বিলম্ব, শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ার জটিলতা, কনস্যুলার সেবার সীমাবদ্ধতা এবং দূতাবাস থেকে তথ্যপ্রবাহের ঘাটতি ইত্যাদি।

হাইকমিশনার মনোযোগসহ এসব অভিযোগ শোনেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন, ‘আমরা চাই প্রতিটি প্রবাসী নাগরিক যেন হয়রানি ছাড়াই সেবা পান। ইতোমধ্যে দূতাবাসের সেবা কার্যক্রমের মান উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা আরও বিস্তৃত করা হবে।’

তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি কর্মীদের কল্যাণ, বৈধকরণ কার্যক্রম, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, বাণিজ্যিক সম্পর্ক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়-সব ক্ষেত্রেই দূতাবাস সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।

মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক শ্রমবাজার সম্পর্ক নিয়ে হাইকমিশনার বলেন, ‘মালয়েশিয়া বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার। আমরা চাই বৈধ উপায়ে শ্রমিক পাঠানোর প্রক্রিয়াটি আরও স্বচ্ছ ও টেকসই হোক, যাতে প্রবাসীরা নিরাপদে কাজ করতে পারেন এবং দুই দেশের অর্থনীতি উপকৃত হয়।’

তিনি জানান, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে বৈধকরণ কার্যক্রমের অগ্রগতি এবং নতুন শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও সহজ করতে কাজ চলছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসিয়ান (ASEAN) সদস্যপদ পাওয়া একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া হলেও বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে কাজ করছে। ‘ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সহযোগিতার আগ্রহের কারণে ভবিষ্যতে এই অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে,’বলেন তিনি।

প্রবাসী সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাইকমিশনার বলেন, ‘প্রবাসীদের অর্জন, সফলতা ও ইতিবাচক গল্পগুলো বেশি করে প্রচার করতে হবে। অনেক প্রবাসী নিজ প্রচেষ্টায় ব্যবসা, শিক্ষা ও প্রযুক্তিতে সাফল্য অর্জন করেছেন—এই গল্পগুলো বিশ্বে তুলে ধরলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।’

তিনি যোগ করেন, “দেশের বাইরে থেকেও আমরা সবাই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছি। আমাদের আচরণ, কাজ ও সংবাদ-সবকিছু মিলেই দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি গড়ে তোলে।’

মতবিনিময় শেষে হাইকমিশনার সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘প্রবাসীদের কল্যাণে সাংবাদিকদের গঠনমূলক ভূমিকা অমূল্য। ভবিষ্যতেও এমন মতবিনিময় নিয়মিত আয়োজন করা হবে, যাতে তথ্য আদান-প্রদান আরও কার্যকর হয় এবং প্রবাসীদের সমস্যা দ্রুত সমাধান সম্ভব হয়।’

সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করেন হাইকমিশনার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি হাইকমিশনার মোসাম্মাত শাহানারা মনিকাসহ দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা।