ছবি: ইমজা নিউজ
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক সংস্কারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে বৈষম্য ও বঞ্চনার প্রতিবাদে ‘সিলেট আন্দোলন’-এর ব্যানারে কোর্ট পয়েন্টে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করছে সিলেটবাসী।
রবিবার (২ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত চলা এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী।
এই কর্মসূচিতে সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন।
অবস্থান ধর্মঘট চলাকালে সিসিকের পানির গাড়ি কোর্ট পয়েন্টের একটি অংশে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়, ফলে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে পরিস্থিতি পরে স্বাভাবিক হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘উন্নয়ন বঞ্চিত সিলেট বরাবরই উপেক্ষিত। সরকার দেশের অন্য বিভাগে যে পরিমাণ বরাদ্দ দিচ্ছে, সেই অনুপাতে সিলেটকে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা বারবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই এবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণ–অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো দলীয় স্বার্থে নয়, সিলেটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেমেছি। এটা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক গণআন্দোলন। উন্নয়ন বৈষম্যের অবসান না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে আমরা বিছানা নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবনের সামনে অবস্থান করব, যতক্ষণ না তারা আমাদের কথা শোনে।’
তিনি উপস্থিত জনতাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে শনিবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগাহ এলাকা থেকে শুরু হয় ‘সিলেট আন্দোলন’-এর মশাল মিছিল। মিছিলটি দরগাহ গেট, জিন্দাবাজার, কোর্ট পয়েন্ট, চৌহাট্টাসহ নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। মশাল মিছিলে কয়েকশ নেতা-কর্মী অংশ নেন। তাদের হাতে ছিল ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার ‘উন্নয়ন চাই, বৈষম্য নয়’, ‘সিলেটের প্রাপ্য ফেরত দাও’ ইত্যাদি স্লোগান লেখা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে নগরীর কুমারপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন আরিফুল হক চৌধুরী। সেই সভা থেকেই ‘সিলেট আন্দোলন’ নামে একটি সর্বজনীন নাগরিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এই প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছেন সিলেটের রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, আইনজীবী, পরিবহন মালিক–শ্রমিক ও ধর্মীয় সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
তাদের দাবি, সিলেটের অবহেলিত অবকাঠামো উন্নয়ন, রেলপথ সংস্কার, বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার, ও বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি বরাদ্দে ন্যায্য অংশ নিশ্চিত করা।