প্রকাশিত : ০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১৯:৩৬ (মঙ্গলবার)
খুলেছে সেন্ট মার্টিন, জাহাজ না চলায় যেতে পারেননি কোনো পর্যটক

ছবি- সেন্ট মার্টিন

নভেম্বরের শুরু থেকেই সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করেছে সরকার। তবে ঘোষণার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো একজন পর্যটকও সেখানে যেতে পারেননি। কারণ, কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে এখনো পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়নি। কবে থেকে জাহাজ চলবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবেন। তবে নভেম্বর মাসে কেবল দিনের বেলায় যাতায়াতের অনুমতি রয়েছে- রাতযাপন নিষিদ্ধ। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ দেওয়া হবে।

কক্সবাজারের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া নামে দুটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু শনিবার ও রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে বলে জানা গেছে।

 রোববার (২ নভেম্বর) সকালে নুনিয়াছটা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাট ফাঁকা। কোনো পর্যটক নেই, নদীতে নেই কোনো জাহাজ। পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন।

জানা গেছে, শনিবার তিনজন পর্যটক টিকিট কেটেছিলেন, কিন্তু জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কেউ যেতে পারেননি।’

জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান জানান, জাহাজ চলাচল নিয়ে সৃষ্ট সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

অন্যদিকে, সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ‘একটি জাহাজ চালাতে দিনে প্রায় ১০ লাখ টাকা খরচ হয়, কিন্তু টিকিট বিক্রি থেকে সর্বোচ্চ দেড়-দুই লাখ টাকা পাওয়া যায়। এত লোকসানে জাহাজ চালানো সম্ভব নয়। তাই পুরো নভেম্বর মাস জাহাজ চালানো হবে না।’

তিনি জানান, বর্তমানে এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় নোঙর করা আছে এবং কক্সবাজার আসতে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে।

পর্যটকেরা জানিয়েছেন, জাহাজ না চলার বিষয়টি আগে থেকে জানানো হলে তারা এমন বিড়ম্বনায় পড়তেন না।

সেন্ট মার্টিনের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকেরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, তিন বছর আগেও টেকনাফ রুটে প্রতিদিন পাঁচ-ছয় হাজার পর্যটক যাতায়াত করত। কিন্তু নিরাপত্তা সংকটের কারণে টেকনাফ রুট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন কক্সবাজার রুটই একমাত্র ভরসা।

সরকারের সিদ্ধান্তে সেন্ট মার্টিনে পরিবেশ রক্ষার জন্য সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক প্রাণী বা প্রবাল ক্ষতি করা এবং পলিথিন বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।