প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১৮:৩৮ (বুধবার)
বিকল্প প্রস্তাবে আরিফুল হক চৌধুরীর 'না'

ফাইল ছবি

সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ার পর ঢাকায় ডেকে নিয়ে বিকল্প প্রস্তাব করেছে কেন্দ্র। তবে তাতে ‘না’ সূচক উত্তর দিয়েছেন সিলেটের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী। আজ সকালে তিনি কেন্দ্রের জরুরি তলবে ঢাকায় যান এবং দুপুরে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় ইমজা নিউজের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী জানান, “আমার অবস্থান আমি পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছি। কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত ভালো মনে করে নিয়েছে, তার বিপরীতে আমার কোনো মন্তব্য নেই।”

আরিফুল হক চৌধুরীর ঢাকায় তলবের খবর জানাজানি হলে সিলেটের সর্বমহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। “কি করবেন আরিফ?”—এমন প্রশ্ন ছিল জেলা জুড়ে কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দুতে। আরিফুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, তিনি “সিলেটের আরিফ”, সিলেটের হয়েই থাকতে চান। আপাতত মনোনয়ন নিয়ে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই বলেও জানান তিনি।

জরুরি তলবে আরিফুল হক চৌধুরী মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে প্রথম ফ্লাইটে ঢাকায় যান। সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে তাঁকে তলব করা হয়। দলের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আরিফুল হক চৌধুরীকে জরুরি আলোচনার জন্য ঢাকায় ডাকা হয়েছে।

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসন (সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর) থেকে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। তবে সোমবার ঘোষিত প্রার্থী তালিকায় এ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অপর উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি ২০১৮ সালেও এ আসন থেকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। তাঁর বাবা মরহুম খন্দকার এম. এ. মালিক ছিলেন একই আসনের সাবেক এমপি।

দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে কিছুটা হতাশ হয়েছেন আরিফুল হক চৌধুরী। কারণ, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তিনি দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের নিয়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, তিনি নিশ্চিত ছিলেন যে এবার মনোনয়ন পাবেন।

এদিকে সোমবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর রাতেই নগরীর কুমারপাড়াস্থ তাঁর বাসায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভিড় জমে। অনেকে প্রস্তাব করেন, যেহেতু সিলেট-৪ আসনে এখনো দল প্রার্থী ঘোষণা করেনি, তাই তিনি চাইলে সেখান থেকে প্রার্থী হতে পারেন। তবে আরিফুল হক চৌধুরী সে প্রস্তাব সরাসরি নাকচ করে দেন।

দলের এক শীর্ষস্থানীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “দল চায় আরিফ অন্য কোনো আসন থেকে প্রার্থী হোন, কিন্তু তিনি তাতে রাজি নন। তিনি বলেছেন, ‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত, আমি তা মেনে নিচ্ছি।’” সূত্র আরও জানায়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিলেট-১ আসনের প্রার্থী নির্বাচনে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদিরের অভিজ্ঞতা, পূর্বের নির্বাচন পরিচালনা এবং পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্য বিবেচনায় এবারও তাঁকে মনোনয়ন দেয় দল।

উল্লেখ্য, সোমবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সিলেট বিভাগের ১৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৪টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেন।