ছবি: সংগৃহিত
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিতর্কিত “রাতের ভোটে” নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্য এবারও বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিল্প-বাণিজ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশীদ।
বিএনপির অনেক নেতাকর্মী অতীতে অভিযোগ করেছিলেন যে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর এই দুই এমপি দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের মাধ্যমে শপথ নিয়ে তৎকালীন শেখ হাসিনা সরকারের বৈধতা দেন। তবুও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাদের মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (৩ নভেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই বিতর্কের বিষয়টি নিয়ে নীরব বিএনপি নেতারা।
এর আগে গত ৩১ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে মো. আমিনুল ইসলামকে মনোনয়ন না দেওয়ার আবেদন করেন নাচোল উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তারা আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ‘রাতের ভোট’ বৈধতা দেওয়া ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং দুই বিএনপি কর্মী হত্যার অভিযোগ তোলেন।
নাচোল উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম মজিদুল হক স্বাক্ষরিত পত্রে অভিযোগ করা হয়, এমপি থাকাকালে আমিনুল ইসলামের কর্মকাণ্ডে দল ও তৃণমূলে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছিল। স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মী তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন, তবে কেউ কেউ এখনো নীরব রয়েছেন।
একাধিক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আন্দোলন-সংগ্রামের সময় আমিনুল ইসলামকে পাশে পাননি তারা। অনেক নেতা-কর্মী দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকলেও তিনি খোঁজ নেননি। ফলে তৃণমূল পর্যায়ে তার প্রতি আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে।
অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দলের নীতিনির্ধারণী মহল যাকে মনোনয়ন দিয়েছে, আমরা তার পক্ষেই কাজ করব। ধানের শীষের বিজয়ের জন্য সবাই একসঙ্গে মাঠে থাকব।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে ১৫৯ কেন্দ্রে আমিনুল ইসলাম পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬৬ ভোট, যেখানে আওয়ামী লীগের জিয়াউর রহমান পান ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫২ ভোট। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির হারুনুর রশীদ পান ১ লাখ ৩৩ হাজার ৬৬১ ভোট এবং তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আব্দুল ওদুদ পান ৮৫ হাজার ৯৩৮ ভোট।