ছবি: সংগৃহিত
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের মধ্য নরসিংহপুর গ্রামে অবস্থিত মুক্তিধাম আশ্রমে শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় দুই দিনব্যাপী লালন সাধুসঙ্গ অনুষ্ঠান উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা রফিউর রাব্বি।
স্থানীয় ধর্মীয় একটি গোষ্ঠীর আপত্তি ও হুমকির কারণে আয়োজকরা এবারের অনুষ্ঠানও সংক্ষিপ্ত করতে বাধ্য হন। গত বছরও একই ধর্মীয় গোষ্ঠীর হুমকি ও বাধার কারণে অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছিল।
মুক্তিধাম আশ্রম ও লালন একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ফকির শাহজালাল জানিয়েছেন, ‘গত বছরের মতোই এবারও আয়োজনে হুমকি-ধমকি চলছে। জেলা প্রশাসনও অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করার পরামর্শ দিয়েছে।’
শাহজালাল বলেন, “২০ নভেম্বর জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে ১৩ শর্তসহ চিঠি দিয়ে আয়োজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে উচ্চস্বরে মাইক না বাজানো, মহিলা-পুরুষ আলাদা বসা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না দেওয়া শর্ত অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু জুমার নামাজের পর ‘তৌহিদি জনতা’ নামে স্থানীয় শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ করলে পুলিশ তাদের নিবৃত করে।”
স্থানীয় হেফাজত নেতা মুফতি আব্দুল হান্নান বলেন, ‘লালন সাধুসঙ্গ আড়ালে অসামাজিক কার্যকলাপ করা হয়। এটি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অনুষ্ঠান বন্ধ করতে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
প্রশাসনের নির্দেশে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। সদর উপজেলা ইউএনও তাছলিমা শিরিন জানান, ‘উচ্চস্বরে কোনো গান-বাজনা বা মেলা হবে না, তবে স্বল্প পরিসরে আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
উদ্বোধক রফিউর রাব্বি বলেন, ‘আয়োজনটি মূলত বড় পরিসরে করা হওয়ার কথা ছিল। তবে স্থানীয় গোষ্ঠীর অভিযোগ ও প্রশাসনের আপোষের কারণে এটি ছোট পরিসরে সীমিত হয়েছে। এটি সংস্কৃতি ও গণতন্ত্রের প্রতি আঘাত।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি দিনা তাজরিন, সাবেক সভাপতি জিয়াউল কাজল, ভবানী শংকর রায় ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও আশ্রমের ভেতরে ও বাইরে সতর্ক অবস্থায় ছিল।