ছবি: আনোয়ার ইব্রাহিম
তিন বছর ধরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। এমন সময়ে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য, সাবাহ এর নির্বাচনে তার সমর্থিত রাজনৈতিক জোটের বড় ধরনের পরাজয়কে তাঁর জন্য একটি উল্লেখযোগ্য ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সাবাহ রাজ্যের নির্বাচনে আনোয়ারের পাকাতান হারাপান (পিএইচ) জোট ২০টি আসনের মধ্যে মাত্র একটি আসনে জয় পেয়েছে। এর আগের নির্বাচনে তারা সাতটি আসন দখলে রেখেছিল। ফলে এবারের ফলাফলকে পিএইচ-এর জন্য `বিপর্যয়কর' হিসেবেই দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার সহযোগী অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক লি কুওক তিয়াং বলেন, `সাবাহ নির্বাচনের ফলাফল দেখিয়ে দিলো আনোয়ারের জোট খুবই বাজেভাবে হেরেছে।'
শনিবার (২৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত সাবাহ নির্বাচন ছিল একাধিক আঞ্চলিক নির্বাচনের সূচনা। যেগুলোকে ২০২৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে আনোয়ারের প্রতি জনসমর্থনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
পাকাতান হারাপানের ভরাডুবি সত্ত্বেও রাজ্যের ক্ষমতা ধরে রেখেছে গাবুঙ্গান রাকায়াকত সাবাহ (জিআরএস)- যা সাবাহ-ভিত্তিক দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত এবং আনোয়ারের জোটসঙ্গী। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে জিআরএস-এর প্রতি রাজ্যের একটি অংশে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। সাবাহ-র স্বায়ত্তশাসন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের মধ্যে আন্দোলন চলছে।
নির্বাচনে জয়ের পর পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় জিআরএস নেতা হাজিজি নুরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেছেন, ‘সাবাহর ভোটারদের বার্তা স্পষ্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকার সেই বার্তার প্রতি সম্মান জানিয়েই কাজ করবে।’
তবে মিত্রদের পরাজয় সম্পর্কে তিনি সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।
রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে মন্তব্য করতে প্রধানমন্ত্রীর অফিসও অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক লি কুওক তিয়াং মনে করেন, সাবাহর ভোটাররা স্থানীয় দলগুলোর প্রতি আস্থা রেখে এবার প্রাধান্য দিয়েছেন- পানি ও বিদ্যুতের সমস্যা, সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন এবং রাজ্যের স্বায়ত্তশাসন–সংক্রান্ত পুরোনো দাবিকে।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে সাবাহবাসীর মনস্তত্ত্ব আরও ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলোর বাস্তব অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হবে।’
গত মাসে সাবাহর এক মন্ত্রী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন এই অভিযোগে যে, কেন্দ্রীয় সরকার ৫০ বছর আগে করা একটি চুক্তির প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী সাবাহর রাজস্ব আয়ের ৪০ শতাংশ রাজ্যকে ফেরত দেওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, সাবাহর দাবি ও সমস্যার সমাধানে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কেন্দ্রীয় সরকার সহযোগিতা চালিয়ে যাবে।