ছবি: কবিতা উৎসবে
আবু বকর আল আমিন,প্যারিস, ফ্রান্স।। ইতালির রাজধানী রোমে প্রথমবারের মতো বাংলা কবিতা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ইউরোপের চিরন্তন নগরীতে বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাসে এটি যোগ করেছে একটি উজ্জ্বল অধ্যায়।
অনুষ্ঠানটি ২২ নভেম্বর বিকেলে রোমের ‘কাসা দেল্লা কুল্তুরা’ এবং তোরপিঞাত্তারা এলাকার পার্ক দে সানকতিসে অনুষ্ঠিত হয়। যৌথভাবে আয়োজন করে ‘শান্তালিয়া কালচার অ্যান্ড ট্র্যাভেল’, স্তেফানো রোমানো ও জিয়াউর রহমান।
উৎসবে অংশ নেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কবি এবং আবৃত্তিশিল্পীরা। ফ্রান্স থেকেও যোগ দেন একদল কবি ও আবৃত্তিকার। তাদের কণ্ঠে বাংলা কবিতা আবৃত্তি ও ইতালিয়ান অনুবাদে প্রাণ পায়। স্থানীয় রোমান ও বাঙালি প্রবাসী দর্শকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জিয়াউর রহমান, স্তেফানো রোমানো এবং শান্তালিয়ার পক্ষ থেকে এনরিকে দি বেনেদেত্তো ও ভিতা কামারদা। প্রফেসর মারিও প্রায়ের বাংলা সাহিত্য, কবিতা ও অনুবাদের গুরুত্বের ওপর বক্তব্য দেন।
এরপর রোমের সাংস্কৃতিক স্কুল ‘সঞ্চারী সঙ্গীতায়ন’-এর দলীয় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।
প্যারিস থেকে আগত শিল্পীরা আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।
মঞ্চে আবৃত্তি পরিবেশন করেন প্যারিসের কবি মেরি হাওলাদার, আবু বকর আল আমিন ও শোয়েব মোজাম্মেল। কাজী নজরুল ইসলাম ও রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতাগুলো ইতালিয়ান ভাষায় অনূদিত হয়ে দর্শকের সামনে উপস্থাপিত হয়।
ভাষা গবেষক জিয়াউর রহমান হৃদয় কবি ও আবৃত্তিকারদের পরিচয় দেন।
ইতালির ফ্লোরেন্স থেকে অমৃতা চৌধুরী এবং রোম থেকে প্রফেসর নিমান সোবহান, প্রফেসর সানজুক্তা দাসগুপ্তা বাংলা ও ইতালিয়ান ভাষায় অনবদ্য শিল্পনৈপুণ্য উপহার দেন। এছাড়া, ফরাসি কবি ভিক্টর হুগোর কবিতা ফরাসি থেকে বাংলায় অনুবাদ ও ইতালিয়ান ভাষায় পাঠ করা হয়।
উৎসব আয়োজক জিয়াউর রহমান বলেন, রোমে অনেক বাঙালি বসবাস করেন, তবে আগে কখনো শুধুমাত্র বাংলা কবিতা নিয়ে এমন আয়োজন হয়নি। এই উৎসব বাংলা সংস্কৃতিকে ইউরোপে পরিচিত করানোর যুগান্তকারী উদ্যোগ হিসেবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
অন্য একজন আয়োজক, শান্তালিয়া কালচার এন্ড ট্র্যাভেলের পরিচালক প্রসূণ মণ্ডল জানান, অনুষ্ঠানটি ভাষার কোনো ভৌগোলিক সীমা ছাড়িয়ে মানুষের হৃদয়ে কবিতার সুর পৌঁছে দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোমে এই আয়োজনের ব্যাপক প্রশংসা দেখা গেছে।
উৎসবের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ঈষাণ দেওয়ান বলেন, 'বাংলা কবিতাকে বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করে বিশ্বের মানুষের সামনে তুলে ধরা বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতির গৌরব প্রদর্শনের একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ।'
তবে আয়োজক স্তেফানো রোমানো মন্তব্য করেন, রোমের বৃহৎ বাঙালি জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ তুলনামূলক কম ছিল। ভবিষ্যতে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক চর্চায় অংশগ্রহণ বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।