
ছবি- সংগ্রহ
ইএন ডেস্ক : ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে শুরু হওয়া সংঘাতের পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একাধিক প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ড্রোন ধ্বংস, গোলাগুলি ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত দুই দেশের অন্তত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী আজ জানিয়েছেন, একাধিক স্থানে ভারতীয় ১২টি ড্রোন ‘নিষ্ক্রিয়’ করা হয়েছে। অভিযানে একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং চারজন পাকিস্তানি সেনা আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, অভিযান এখনো চলমান।
অন্যদিকে, ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বুধবার গভীর রাতে কাশ্মীর সীমান্তের কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি ও আখনূর এলাকায় পাকিস্তানি সেনাচৌকি থেকে বিনা উসকানিতে গোলাগুলি ও কামান হামলা চালানো হয়। ভারতীয় বাহিনীও পাল্টা জবাব দিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এই সংঘাতের সূত্রপাত ঘটে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর। ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তান সেই হামলায় মদদ দিয়েছে। এর জবাবে মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
ভারতের এই হামলার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বুধবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, “পাকিস্তান এর বদলা নেবে।”
পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় হামলা ও সীমান্তে গোলাগুলিতে তাদের অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। অন্যদিকে ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানি গোলাবর্ষণে তাদের অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করে দুই দেশকে যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। হোয়াইট হাউসে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান—উভয় দেশের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। আমরা চাইলে এই সংঘাত নিরসনে সহায়তা করব।”
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের এই উত্তেজনা আরও বাড়লে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের আশঙ্কা।
সূত্র: এএফপি