
ছবি- ফেসবুক
সুনামগঞ্জের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রামসার এলাকা টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে পর্যটকদের জন্য ১৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। শনিবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজে একটি সচেতনতামূলক ফটোকার্ডের মাধ্যমে এসব নির্দেশনা জানানো হয়।
বর্জনীয় নির্দেশনাসমূহ হচ্ছে- উচ্চ শব্দে গান-বাজনা করা বা শোনা যাবে না; হাওরের পানিতে প্লাস্টিক বা অজৈব বর্জ্য ফেলা যাবে না; মাছ ধরা, শিকার ও পাখির ডিম সংগ্রহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ; পাখির স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটানো যাবে না; ডিটারজেন্ট, শ্যাম্পু বা অন্যান্য রাসায়নিক ব্যবহার করা যাবে না; গাছ কাটা, ডাল ভাঙা কিংবা বনজ সম্পদ সংগ্রহ নিষিদ্ধ; কোর জোন বা সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করা যাবে না; মনুষ্যসৃষ্ট জৈব বর্জ্য হাওরে ফেলা যাবে না।
এছাড়া করণীয় সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া আছে। নির্দেশনাসমূহ হচ্ছে- নির্ধারিত নৌপথ ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা থাকবে; ভ্রমণকালে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করতে হবে; প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহারে বিরত থাকতে হবে; ফ্ল্যাশ ছাড়া ছবি তুলে পাখি ও প্রাণী দূর থেকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে; স্থানীয় গাইড ও পরিবহন সেবার মাধ্যমে দায়িত্বশীল ভ্রমণ নিশ্চিত করতে হবে; ক্যাম্পফায়ার বা যেকোনো ধরনের আগুন জ্বালানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
জেলা প্রশাসনের প্রকাশিত বার্তায় জানানো হয়, টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলার অন্তর্গত ১০টি মৌজাজুড়ে বিস্তৃত, যেখানে ছোট-বড় ১০৯টি বিলের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে এই জীববৈচিত্র্যপূর্ণ জলভূমি।
মেঘালয়ের পাদদেশে অবস্থিত টাঙ্গুয়ার হাওরের আয়তন প্রায় ১২,৬৫৫.১৪ হেক্টর। এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মিঠাপানির জলাভূমি এবং ২০০০ সালে ‘রামসার কনভেনশন’ এর আওতায় আন্তর্জাতিকভাবে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই হাওরের জীববৈচিত্র্য টিকিয়ে রাখতে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় সচেতন ভ্রমণই একমাত্র উপায়। পর্যটকদের আচরণ ও দায়িত্ববোধে সামান্য অবহেলা পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হতে পারে।
পর্যটকদের সচেতন অংশগ্রহণই হতে পারে টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষার অন্যতম চালিকা শক্তি- এমনটাই মনে করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।