প্রকাশিত : ০৬ জুলাই, ২০২৫ ১৫:৪২ (সোমবার)
ত্রাণকেন্দ্রে হামলায় প্রাণ গেল ৭৪৩ ফিলিস্তিনির

ছবি: সংগ্রহ

গাজায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ও ইসরায়েল সমর্থিত সংস্থা ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোর আশপাশে চলমান হামলায় কয়েক শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানা গেছে, মে মাসের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া এই বিতরণ কার্যক্রমে এ পর্যন্ত ৭৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৮৯১ জন আহত হয়েছেন।

জিএইচএফের বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ত্রাণ নিতে আসা সাধারণ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। এসব হামলায় অংশ নিয়েছে সংস্থাটির ভাড়াটে নিরাপত্তাকর্মীরা এবং ইসরায়েলি সেনারা।

গাজার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, ‘মানুষ যখন পরিবারের সদস্যদের জন্য একটু খাবারের জন্য মরিয়া, ঠিক তখনই এই ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে গুলি ও হামলা চালানো হচ্ছে। অনেক মা নিজে না খেয়ে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছেন।’

এই সপ্তাহের শুরুতে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এক প্রতিবেদন জানায়, জিএইচএফ পরিচালিত ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে আসা নিরস্ত্র বেসামরিকদের ওপর গুলি ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়া হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘অস্ত্রধারী কর্মীরা যা খুশি তাই করছে’, তাঁদের আচরণ ছিল বেপরোয়া ও দায়িত্বহীন।

ত্রাণ নিতে গিয়ে আহত হওয়া ফিলিস্তিনি মজিদ আবু লাবান জানান, ‘আমার সন্তানেরা টানা তিন দিন না খেয়ে ছিল। আমি বাধ্য হয়ে জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে গিয়েছিলাম।’

সমালোচনার জবাবে জিএইচএফ দাবি করেছে, এপির প্রতিবেদন ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ এবং তাদের কার্যক্রমস্থলগুলোতে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বজায় রাখতে তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।

এদিকে জুন মাসের শেষ দিকে ট্রাম্প প্রশাসন জিএইচএফের জন্য ৩ কোটি ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যা বিতর্ককে আরও জোরালো করেছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন। তবে কূটনৈতিক তৎপরতা চললেও গাজায় হামলা থেমে নেই। রোববার ভোরেও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

এই হামলাগুলোর ফলে মানবিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মহলের কাছে জবাবদিহিতার দাবি আরও জোরালো হয়ে উঠছে।