প্রকাশিত : ০৭ জুলাই, ২০২৫ ০২:১৬ (সোমবার)
পরিবহন ধর্মঘটে ভাঙ্গন: মঙ্গলবার থেকে জামায়াতপন্থীদের গা‌ড়ি চল‌বে।

ছবি: ইমজা নিউজ

সিলেটের সকল পাথরকোয়ারি খুলে দেওয়া সহ পাঁচ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের সাথে সমর্থন নেই বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীপন্থী পরিবহন মালিকেরা। এ সময় এ আন্দোলনকে মালিক-শ্রমিকের কল্যাণহীন দাবি করে জুলাই আন্দোলনের চেতনা বিরোধীদের ষড়যন্ত্র বলে দাবি করা হয়।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ও জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ এ ঘোষণা দেন। এতে সিলেটে চলমান পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে হঠাৎ করেই দেখা দিয়েছে নাটকীয় মোড়।

মাওলানা লোকমান আহমদ জানান, রবিবার (৬ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনালে এক জরুরি বৈঠকে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

জামায়াত নেতা মাওলানা লোকমান আহমদ বলেন, আগামী মঙ্গলবার থেকে শুরু হতে যাওয়া শ্রমিক কর্মবিরতি ও ধর্মঘটে তারা অংশ নেবেন না। বরং তাদের মালিকানাধীন যানবাহন সড়কে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মাওলানা লোকমান আহমদ দাবি করেন, চলমান কর্মবিরতি ও ধর্মঘট প্রকৃতপক্ষে মালিক ও শ্রমিকদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে আহ্বান করা হয়নি। বরং এটিকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “যারা শ্রমিকদের ব্যবহার করে পাথর কোয়ারির আন্দোলন করছেন, তারা পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন। এটি সুস্পষ্টভাবে একটি দুরভিসন্ধিমূলক অপচেষ্টা।”

এ সময় তিনি সাবেক সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনি পরিবহন সেক্টরে এসে বিভ্রান্তিমূলক সিদ্ধান্ত দিয়ে যেন অস্থিরতা সৃষ্টি না করেন। যদি আপনার জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কোনো বিরোধ থাকে, তা হলে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে বসে সমাধানে আসুন।”

মাওলানা লোকমান আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুদু এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ২৭ জুন রাত ১২টা থেকে ৩টা ১০ মিনিট পর্যন্ত সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় গোপন বৈঠক করেছেন। তিনি বলেন, এই গোপন বৈঠকে অংশ নিয়েছে ফ্যাসিস্টের দোসররা। তারা সকলে মিলে জুলাই আন্দোলনের চেতনা নস্যাৎ করতে চাইছে।”

তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “শাহজাহান খানের চেয়ারে বসে দুদু যদি সিলেটে এসে গোপন বৈঠক করে জুলাই চেতনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করেন, তাহলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”

উল্লেখ্য, আগামী মঙ্গলবার থেকে সিলেট জেলার পাথর কোয়ারি খোলাসহ পাঁচ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট জেলা সর্বস্তরের পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। তবে জামায়াতপন্থী পরিবহন মালিকদের সরে যাওয়ার ঘোষণায় আন্দোলনে স্পষ্ট বিভাজন তৈরি হয়েছে।