প্রকাশিত : ১৯ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৫৬ (শনিবার)
বিয়ানীবাজারে ইপিআই টিকা কার্ড নিয়ে ভোগান্তি

ছবি: সংগৃহিত।

বিয়ানীবাজারে সম্প্রতি এক্সপান্ডেড প্রোগ্রাম অন ইম্যুনাইজেশন (ইপিআই) টিকাদান কার্যক্রমে অনলাইন পদ্ধতি চালুর পর থেকে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত ম্যানুয়াল টিকা কার্ড ব্যবস্থা বন্ধ করে অনলাইন কার্ড চালু করায় তৈরি হয়েছে নানা জটিলতা। ফলে কয়েক মাস ধরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে টিকা কার্ড না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে অনলাইনেই ইপিআই কার্ড তৈরির নিয়ম চালু হয়েছে। এর জন্য সেবাপ্রার্থীকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে আইডি তৈরি করতে হয়। শিশু ও অভিভাবকদের জন্ম নিবন্ধন সনদের তথ্য সংযুক্ত করে অনলাইন কার্ড পূরণ করে তা প্রিন্ট করে নিতে হয়। কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়াটি অনেক সাধারণ মানুষের কাছে জটিল হয়ে উঠেছে।

সেবাপ্রার্থী এমরান হোসেন জানান, ‘আগে ম্যানুয়াল কার্ডে কোনো সমস্যা ছিল না। এখন অনলাইন কার্ড করতে গিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। সময়মতো কার্ড না পাওয়ায় অনেকেই টিকা নিতে পারছে না।’
একই অভিযোগ করেন সেবাপ্রার্থী তান্নি বেগম। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য সহকারীরা আমাদের কার্ড ডাউনলোড করে দেন না। ফলে নিজেরাই করতে হয়। কিন্তু সবাইতো এত কিছু বোঝে না। টিকা দেওয়ার তারিখ চলে গেলেও কার্ড না থাকায় টিকা নেওয়া যাচ্ছে না।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন স্বাস্থ্য সহকারী জানান, তারা প্রতিদিন টিকাদান কাজের পাশাপাশি অনলাইন কার্ডের নিবন্ধন ও ডাউনলোড করতে গিয়ে অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ছেন। এর ফলে মূল টিকাদান কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে।
এক স্বাস্থ্য সহকারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আগে শুধু টিকা দিলেই হতো। এখন অনলাইনে কার্ড করতে গিয়ে অনেক সময় চলে যাচ্ছে। একদিকে টিকা, অন্যদিকে নিবন্ধন- সব মিলে কাজের গতি কমে গেছে। রোগীদের ক্ষোভও আমাদের ওপর পড়ে।’

এ প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মনিরুল হক খান বলেন, ‘পুরোনো ব্যবস্থার জায়গায় নতুন পদ্ধতি চালু হয়েছে। শুরুতে কিছু সমস্যা হতেই পারে। তবে ধীরে ধীরে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে যাবে। কেউ সমস্যায় পড়লে আমাদের স্বাস্থ্য দপ্তরে যোগাযোগ করলে যথাসাধ্য সহায়তা করা হবে।’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইন কার্ড পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদে সুবিধাজনক হলেও এর সহজ ও জনবান্ধব বাস্তবায়ন ছাড়া সাধারণ মানুষের কাছে তা কেবল হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। দ্রুত এই সেবা সহজীকরণ না হলে ইপিআই কর্মসূচি ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।