
বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদ (বামসাস) তার গৌরবময় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে আয়োজিত দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানটি শুক্রবার (২৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত হয় সিলেটের ঐতিহ্যবাহী সারদা হলে।
সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক এল প্রশান্ত কুমার সিংহের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সম্মাননা ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক। তিনি বলেন, ‘মণিপুরী সাহিত্যের রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্য। এ সাহিত্যকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পৌঁছে দিতে অনুবাদ ও গবেষণার বিকল্প নেই। এখন সময় এসেছে মণিপুরী ভাষা ও সাহিত্যকে আরও গভীরভাবে জানার ও জানাবার।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ও ঢাকাবাসী মণিপুরী সংগঠনের সভাপতি কোংখাম নীলমণি সিংহ, সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, অধ্যাপক ডা. প্রমোদ রঞ্জন সিংহ, ত্রিপুরা মণিপুরী সাহিত্য পরিষদের সভাপতি এল. বীরমঙ্গল সিংহ এবং আসামের মণিপুরী লিটারারি সোসাইটির সভাপতি এল. মঙলেম্বা সিংহ।
আলোচনা সভায় বামসাসের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নেতৃত্বদানকারী সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সম্মাননা ক্রেস্ট, উত্তরীয় ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়। বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির ফেলো ও গবেষক এ কে শেরাম, নাট্যব্যক্তিত্ব এম উত্তম সিংহ রতন, কবি শেরাম নিরঞ্জন এবং এল. রুমিতা সিনহা।
এর আগে সকালেই শুরু হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের বর্ণাঢ্য পর্ব। কবি রওশন আরা বাশি খুৎহৈবম এর সভাপতিত্বে এবং কবি অহৈবম অঞ্জুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন মদনমোহন কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান কবি হোসনে আরা কামালী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলার কবি এল. মিনা দেবী। বাংলা ও মণিপুরী ভাষায় অর্ধশতাধিক কবি তাঁদের স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে বামসাস শিশু শিল্পীদের পরিবেশনায় কোরাস সংগীত এবং বামসাসের কমলগঞ্জ শাখার শিল্পীদের পরিবেশনায় মণিপুরী নৃত্য পরিবেশিত হয়। সাংস্কৃতিক পর্বটি পরিচালনা করেন কেএইচ সমেন্দ্র সিংহ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বামসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কবি নামব্রম শংকর এবং আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন নীহার রঞ্জন শর্মা।
সুবর্ণজয়ন্তীর এই আয়োজনে মণিপুরী সংস্কৃতি, ভাষা ও সাহিত্যচর্চার এক জীবন্ত আবহ তৈরি হয়-যেখানে অতীতের গৌরব, বর্তমানের সৃজন ও ভবিষ্যতের সম্ভাবনা একসূত্রে গাঁথা হয়ে ওঠে।