
ছবি: সংগৃহীত।
প্রায় দুই দশকের বিরতির পর আবার ফিরছে শিশু-কিশোরদের জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি’। মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন-কেউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা, কেউবা প্রিয় অনুষ্ঠানটির দৃশ্য ও ছবি শেয়ার করেন।
‘নতুন কুঁড়ি’র যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে, কবি গোলাম মোস্তফার কিশোর কবিতা থেকে নাম নিয়ে। কবিতার প্রথম ১৫ লাইন ব্যবহৃত হতো অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীতে। স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় বিটিভিতে পুনরায় শুরু হয় অনুষ্ঠানটি, যা দ্রুতই শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চে পরিণত হয়। গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রতিভা প্রদর্শনের সুযোগ মিলত এই আয়োজনে। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলার পর নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০২০ সালে ফের শুরু করার পরিকল্পনা থাকলেও কোভিড মহামারির কারণে তা সম্ভব হয়নি।
বছরের পর বছর ধরে ‘নতুন কুঁড়ি’ অনেক তারকাকে উপহার দিয়েছে-তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশা, সামিনা চৌধুরীসহ অসংখ্য জনপ্রিয় শিল্পী এই মঞ্চ থেকে উঠে এসেছেন।
নতুন মৌসুমের তথ্য
বিটিভির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, আবেদন গ্রহণ শুরু হবে আগামী ১৫ আগস্ট থেকে, চলবে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সারা দেশকে ১৯টি অঞ্চলে ভাগ করে প্রাথমিক বাছাই অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি অঞ্চলের শিল্পকলা একাডেমি ভবন বাছাইয়ের ভেন্যু হিসেবে নির্ধারিত হয়েছে।
প্রতিযোগিতা হবে নয়টি বিষয়ে-অভিনয়, আবৃত্তি, গল্প বলা বা কৌতুক, সাধারণ নৃত্য বা উচ্চাঙ্গ নৃত্য, দেশাত্মবোধক বা আধুনিক গান, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, লোকসংগীত এবং হামদ-নাত। বয়সসীমা অনুযায়ী থাকবে দুটি বিভাগ: ‘ক’ শাখা (৬-১১ বছর) ও ‘খ’ শাখা (১১-১৫ বছর)। বিভাগীয় বাছাই শেষে চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ঢাকায়, ২-৬ নভেম্বরের মধ্যে।
অনেকের মতে, ‘নতুন কুঁড়ি’ শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়-এটি দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটি আন্দোলনের নাম, যা প্রজন্মের পর প্রজন্মের শিল্পীদের শিল্পযাত্রার সূচনা করেছে।