প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ০৮:০৬ (সোমবার)
সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে  দেশ পুরোনো সমস্যায় ফিরবে: প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস

ছবি: সংগৃহীত

গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে বাংলাদেশ আবারও পুরোনো রাজনৈতিক সংকটে পড়বে বলে সতর্ক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সিঙ্গাপুরভিত্তিক চ্যানেলনিউজএশিয়া (সিএনএ)-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি স্বচ্ছ, উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং নির্বাচনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানান।

ইউনূস বলেন, `যদি আমরা নির্বাচন দিয়েই শুরু করি, কিন্তু বিচার ও সংস্কার না করি, তাহলে সবকিছু আবার নির্বাচিতদের হাতে চলে যাবে এবং আমরা আবার পুরোনো সমস্যায় ফিরে যাব।'

সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন-তিন ধাপের অঙ্গীকার

সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার সময় তাঁদের অঙ্গীকার ছিল গণ-অভ্যুত্থানের সময় জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। এ লক্ষ্য তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়-সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন।
তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকার রাজনৈতিক ও নির্বাচনব্যবস্থা জালিয়াতির মাধ্যমে অপব্যবহার করে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা তৈরি করেছিল, যা দেশের অর্থনীতি ও সমাজকে ধ্বংস করেছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর অবস্থা ছিল `৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দেশের মতো'।

শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ

প্রধান উপদেষ্টা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘দানব’ আখ্যা দিয়ে বলেন, `যদি আরও শক্তিশালী কোনো শব্দ থাকত, সেটাই ব্যবহার করতাম। কারণ, তিনি রাস্তায় খুব কাছ থেকে মানুষ হত্যা করেছেন।'
তিনি জানান, শেখ হাসিনার প্রত্যাবাসনের জন্য ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়নি, তবে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে গভীর এবং দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকেও (সেভেন সিস্টার্স) একটি আঞ্চলিক অর্থনৈতিক কাঠামোয় আনার প্রস্তাব দেন তিনি।

চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক

তিনি উল্লেখ করেন, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ভালো সম্পর্ক রয়েছে এবং ভারতের সঙ্গেও ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রাখতে সরকার আগ্রহী।

সাক্ষাৎকারে তিনি পুনরায় নিশ্চিত করেন যে, নির্বাচনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই এবং একটি `গ্রহণযোগ্য, উৎসবমুখর ও স্বচ্ছ নির্বাচন' আয়োজন করাই তাঁর লক্ষ্য।