প্রকাশিত : ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১৫:০১ (সোমবার)
সাদাপাথর লুট নয়: ধলাই সেতু রক্ষার আন্দোলন করায় গ্রেপ্তার আলমগীর

ছবি: সংগৃহীত।

সাদাপাথর লুট নয় বালুচুরির পুরনো মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আলমগীর হোসেন আলমকে। অথচ তাকে পাথর লুটের অভিযোগে গ্রেফতার করে বাহবা নিতে চাইছে স্থানীয় প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে সম্প্রতি ধলাই সেতু রক্ষা কমিটির আহবায়ক হয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় তাকে পুরনো মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ছাতক নৌ পুলিশের দায়েরকৃত ২০২৪ সালের বালু চুরির মামলায় গ্রেফতার করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ভোলাগঞ্জের সাদাপাথর লুটের ঘটনায় আটক দাবি করে চলমান বিতর্ক প্রশমিত করার চেষ্টা করছে।

সিলেট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোম্পানীগঞ্জ জিআরও সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানীগঞ্জ জিআর মামলা নং ১৭৩/২০২৪-এ গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে, সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র বিতর্কের মধ্যে ডিবি পুলিশ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ভোরে তাকে গ্রেফতার করে। আলমগীর হোসেন আলম কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

২০২৪ সালের ১৯ জুন কোম্পানীগঞ্জের ফরেস্ট এলাকা থেকে বালু চুরির অভিযোগে এসআই অপু দাস গুপ্ত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আলমগীর ছিলেন এজাহারের ৮ নম্বর আসামি। বর্তমানে তিনি ধলাই সেতু রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক। সম্প্রতি তিনি সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও বালু খেকো হিসেবে পরিচিত মকসুদ আহমেদের বিরুদ্ধে ধলাই সেতু ধ্বংসের অভিযোগে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। এ কারণে পুলিশ ও প্রশাসনের কিছু অংশের বিরাগভাজন ছিলেন তিনি।  ধলাই সেতুর দক্ষিণের বালুমহাল নিয়ে বিএনপি ও যুবদলের শীর্ষ নেতাদের সাথে বিরোধের মধ্যে হঠাৎ সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। এরপর পুরোনো মামলার ওয়ারেন্ট তামিল করে তার গ্রেফতারকে সাদাপাথর লুট মামলার সাথে যুক্ত করে প্রচার চালায় প্রশাসন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সুজন চন্দ্র জানান, আলমগীর আলম চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আগের মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় তাকে আটক করেছে ডিবি। পরে ডিবি তাকে থানায় হস্তান্তর করে।

উল্লেখ্য, গত এক মাস ধরে প্রশাসনের সামনে সর্বদলীয় ঐক্যে রাজনৈতিক নেতারা হাজার হাজার শ্রমিক দিয়ে ভোলাগঞ্জ পর্যটন এলাকা, সাদাপাথর ও পার্শ্ববর্তী রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা থেকে প্রকাশ্যে পাথর লুট করে। প্রশাসন তখন নীরব ছিল। কিন্তু গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে এবং বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ায়। পরে প্রশাসনের সব বিভাগ একযোগে মাঠে নামে এবং পুরোনো মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা ব্যবহার করে আলমগীর হোসেন আলমকে আটক করে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়, যা মূল বিতর্ক আড়াল করার প্রচেষ্টা হিসেবে সমালোচিত হয়েছে।