
ছবি: সংগৃহীত।
‘ক্লোজআপ ওয়ান’ দিয়ে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করা গায়ক মশিউর রহমান রিংকু অল্প সময়ে নিজস্ব শ্রোতাপ্রেমী তৈরি করতে সক্ষম হন। সংগীত অঙ্গনে মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে আলাদা পরিচয় তৈরি করতে করতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, যার কারণে তিনি গান থেকে দূরে সরে যান।
রিংকুর জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘ভুল বুঝে চলে যাও, যত খুশি ব্যথা দাও, সব ব্যথা নীরবে সইব বন্ধুরে তোমার লেখা গান আমি গাইব’। লাইভ অনুষ্ঠান বা টেলিভিশনে গানটি গাইতে গিয়ে কখনো হঠাৎ থেমে যেতেন তিনি। তিনি শোনাতেন শৈশবের স্মৃতি-নাটোরের চলনবিল এলাকায় শীতের দিনে যাত্রা দেখতে যাওয়া এবং সেই যাত্রার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা গান। গানেই তিনি প্রেরণা পেয়েছিলেন, তবে এখন সেই প্রেরণার জগৎ থেকে দূরে।
গত বছর ঢাকায় সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেন রিংকু। তিনি জানান, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে গান আর নিয়মিত করতে পারছেন না। সর্বশেষ গাওয়া গানটি ছিল ‘জোছনাবিলাস’। তিনি বলেন, ‘হয়তো এই গানেই শেষ গানের অভিমান ছিল।’
রিংকু সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনি রোগের সঙ্গে প্রতিদিন যুদ্ধ করছেন। চারবার স্ট্রোক করার কারণে কথায় জড়তা এসেছে। তিনি বলেন, ‘আগের মতো গাইতে পারি না। গান এখন শুধু মনে থাকে, কিন্তু মানসিকভাবে আর করতে পারি না।’
ঢাকায় একসময় রাত-দিন গানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। টেলিভিশন লাইভ, স্টেজ শো, বিভিন্ন অনুষ্ঠান-সবই ছিল তার ব্যস্ততা। কিন্তু বর্তমানে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার গ্রামে থাকায় শিল্পী ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা যেন অচেনা হয়ে গেছেন। রিংকু বলেন, ‘আমার খবর আর কেউ নেয় না। ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই স্বার্থপর। ক্লোজআপ ওয়ানের বন্ধুরাও আর খবর নেয় না।’
রিংকুর দিন কাটে গ্রামে, যেখানে তিনি দীর্ঘ কয়েক বছর অবস্থান করছেন। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় মঞ্চে থাকার সময় হঠাৎ বাবা মারা যান, শোকের মধ্যে স্ট্রোক হলে তিনি গানের জগৎ থেকে দূরে সরে যান। বর্তমানে আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠছেন এবং টুকটাক গানও শুরু করেছেন। তবে নিয়মিত গান আর গাওয়া হয় না, জীবন কাটে নওগাঁর গ্রামে।