প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ১২:৪৭ (বৃহস্পতিবার)
এজেন্সির প্রতারণায় নিঃস্ব হয়ে ফিরছেন সৌদি প্রবাসীরা

ছবি: সংগৃহীত।

বিদেশে স্বপ্নের চাকরির আশায় বিপুল অর্থ খরচ করলেও বাস্তবে প্রতারণার শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে দেশে ফিরছেন অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি। এমনই এক দালালের ফাঁদে পড়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন চাঁদপুরের রাসেল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘যাওয়ার পর থেকেই আমি অবৈধ। যে এজেন্সি দিয়া গেছি তারাও আর খোঁজ নেয় নাই। শেষ পর্যন্ত আমি নিজেই পুলিশের কাছে ধরা দেই। ছয় মাস জেল খেটে আজ শূন্য হাতে দেশে ফিরলাম’ 

গত ১৯ আগস্ট রাসেলসহ ১৯ বাংলাদেশি অবৈধ হওয়ার দায়ে সৌদি আরব থেকে ফেরত আসেন। গায়ে থাকা পোশাক আর একটি মোবাইল ছাড়া দেশে ফেরার মতো কিছুই সঙ্গে আনতে পারেননি তারা।

প্রতারণার ফাঁদে প্রবাসীরা

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি লাখ লাখ টাকা নিয়ে ভালো বেতনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে কাজ মিলছে না। নির্ধারিত বেতন তো দূরের কথা, বৈধ কাগজপত্র (ইকামা) না থাকায় অবৈধ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। ফলে একদিকে অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটার পর ফেরত আসতে হচ্ছে দেশে।

গাজীপুরের রুবেল হোসেনও এমন প্রতারণার শিকার। তিনি জানান, ২০২২ সালে একটি এজেন্সি সাড়ে ছয় লাখ টাকা নিয়ে তাকে সৌদি পাঠায়। প্রতিশ্রুতি ছিল হোটেলে চাকরি, বেতন তিন হাজার রিয়াল। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সাপ্লাই কোম্পানির অধীনে অমানবিক শ্রমে নিয়োজিত হতে হয়। বেতন অনিয়মিত, ইকামাও দেওয়া হয়নি।

‘প্রথম দুই বছরে দুই লাখ টাকার বেশি পাইনি। এরপর জেলে গিয়ে সবকিছুই বন্ধ হয়ে যায়। এখন দেশে ফিরে হাতে কিছুই নেই। শুধু এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি ফেরার ভাড়া হিসেবে এক হাজার টাকা দিয়েছে’-বলছিলেন হতাশ রুবেল।

হাজার হাজার শ্রমিক ফিরছেন

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মীকে। শুধু চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত অন্তত ২৫ হাজার প্রবাসী দেশে ফিরেছেন।

নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিত করা ও প্রতারণামুক্ত কর্মসংস্থানের জন্য কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়া হলে এভাবে হাজার হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।