ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী দোসর হিসেবে পরিচিত আমলা, বিচারপতি, সামরিক কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসিদের পাসপোর্ট ইস্যুতে হঠাৎ নমনীয় হয়েছে সরকার।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের জন্য অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজন জুলাই হত্যা মামলার আসামি, আবার কারও বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তদন্ত চলছে। এছাড়া একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। এনওসি হাতে পাওয়ার পর তাদের কয়েকজন ইতোমধ্যে নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন এবং কেউ কেউ দেশ ত্যাগও করেছেন বলে জানা গেছে।
আগস্টে সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী-এমপি ও উচ্চপদস্থ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল বা নবায়নে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ করে কূটনৈতিক মর্যাদার লাল পাসপোর্ট রূপান্তরে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই সরকার সেই কঠোর অবস্থান থেকে সরে এসেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্তরা পাসপোর্ট পেলেও সহজে বিদেশ যেতে পারবেন না, কারণ ইমিগ্রেশনে তাদের আটকে দেওয়া হবে।
সূত্র জানিয়েছে, ১৯ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুটি চিঠির মাধ্যমে মোট ৩৯ জনের পাসপোর্টে অনাপত্তি দেওয়া হয়েছে। সুরক্ষা সেবা বিভাগের উপসচিব নীলিমা আফরোজ স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ থাকে-‘বর্ণিতদের অনুকূলে বিধি মোতাবেক প্রাধিকার অনুযায়ী পাসপোর্ট প্রদানে নির্দেশক্রমে অনাপত্তি জ্ঞাপন করা হলো।’
যাদের অনুকূলে এই এনওসি দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক বিচারপতি কাজী রেজাউল হক, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা, বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি আতাউর রহমান খান ও তার স্ত্রী রেহানা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মাকসুদ কামাল, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল (অব.) নকিব আহমদ ও তার স্ত্রী সুজানা তারান্নুম চৌধুরী, পিএসসির সাবেক সদস্য অধ্যাপক মুবিনা খন্দকার ও তার স্বামী মাসুদুর রহমান, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক কাউসার আহমেদ ও তার স্ত্রী অধ্যাপক শামিমা সুলতানা।
এছাড়া তালিকায় আছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম, পিরোজপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি কাজী সাইফুদ্দিন ও তার স্ত্রী রুকসানা ইয়াসমিন, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মোহাম্মাদ আব্দুর রশিদ ও তার স্ত্রী লুৎফুন্নেসা সুলতানা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি গোলাম সাব্বির সাত্তার ও তার স্ত্রী তানজিনা ইয়াসমিন এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক এমদাদুল হক চৌধুরীর স্ত্রী পারভিন সুলতানা।