প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৪:২৯ (বৃহস্পতিবার)
হাসপাতালের শয্যায় বিয়ে

ছবি: সংগৃহীত।

বছরখানেক আগে পরিচয় হয় আনন্দ সাহা ও অমরিতা সরকারের। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ের দিনক্ষণ নির্ধারিত হয়েছিল এ বছরের ১৫ ডিসেম্বর। কিন্তু হঠাৎ ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনা সব পরিকল্পনা বদলে দেয়।

গত ৭ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে মোটরসাইকেলে মানিকগঞ্জে ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন আনন্দ। দুর্ঘটনায় তার দুই হাত ও একটি পা ভেঙে যায় এবং কোমরে প্রচণ্ড আঘাত লাগে। তিনি প্রথমে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন, পরে মানিকগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। এখনো তিনি শয্যাশায়ী, চলাফেরা সম্পূর্ণ অন্যের ওপর নির্ভরশীল।

প্রিয়জনের এমন সংকটময় সময়ে পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নেন অমরিতা। দুই পরিবারের আলোচনার পর বিয়ের আয়োজন আগেভাগে করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মানিকগঞ্জ শহরের বেসরকারি হাসপাতালের হলরুমেই অনুষ্ঠিত হয় তাদের আনুষ্ঠানিক বিবাহ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে থাকা আনন্দ কনের মাথায় সিঁদুর পরাচ্ছেন, হাতে ব্যান্ডেজ থাকা সত্ত্বেও। ধর্মীয় আচার মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের কয়েকজন ঘনিষ্ঠজন।

আনন্দ সাহা মানিকগঞ্জ শহরের চান মিয়া লেনের বাসিন্দা, তার বাবা অরবিন্দ সাহা স্থানীয় ব্যবসায়ী। নববধূ অমরিতা সরকার ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরী গ্রামের সন্তান এবং বর্তমানে মানিকগঞ্জ শহরের খানবাহাদুর আওলাদ হোসেন খান কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

হাসপাতালের মেডিকেল অ্যান্ড ইউনিট প্রধান সিরাজুল ইসলাম জানান, রোগীর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই সীমিত পরিসরে বিয়ের আয়োজন করা হয়, যাতে অন্য কোনো রোগীর সেবায় ব্যাঘাত না ঘটে।

আনন্দের চাচাতো ভাই অমি সাহা বলেন, ‘ডিসেম্বরে বড় আয়োজনে বিয়ের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে আমাদের প্রথম কাজ ছিল আনন্দের চিকিৎসা ও সেবা। তাই সীমিত পরিসরে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়েছে। নবদম্পতির জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।’