
ছবি: সংগৃহীত।
সিলেটের আলোচিত ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর লুটকাণ্ডের ‘মূলহোতা’ হিসেবে চিহ্নিত জেলা বিএনপির স্থগিত হওয়া সহসভাপতি হাজি সাহাব উদ্দিনকে রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদালতে হাজির করেছে পুলিশ। এসময় তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়।
সিলেট মহানগর পুলিশের পরিদর্শক (কোর্ট) মো. জামশেদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৭ এর বিচারক ধ্রুব জ্যোতি পাল শুনানি না করে তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রিমান্ড শুনানির তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি বলে জানান তিনি।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে র্যাব-৯ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোম্পানীগঞ্জ থেকে সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। খনি ও খনিজসম্পদ নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন আইনে কোম্পানীগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাকে আটক করা হয়। পরে রাতেই তাকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব-৯ এর পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলনের ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে দেশব্যাপী সমালোচনা সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হলে সাহাব উদ্দিন ধরা পড়েন।
সাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে পাথর ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এবং ভোলাগঞ্জ পাথর আমদানিকারক সংগঠনেরও নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তার নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী চক্র ভোলাগঞ্জে সক্রিয় হয়ে ওঠে। তার বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখল, পাথরমহাল ভাড়া দেওয়া, এমনকি ৫ আগস্ট ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের পাশে একটি রিসোর্ট ও রোপওয়ে বাঙ্কারে হামলার অভিযোগও রয়েছে।
এক বছর আগে ওই হামলার পর তার অনুসারীরা সাদা পাথর এলাকায় প্রকাশ্যে দখল ও লুটপাট চালিয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।
সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সাদা পাথর লুট ছাড়াও সাতটি মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ১১ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে তার সব পদ স্থগিত করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কারণে সাহাব উদ্দিনকে সব ধরনের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হলেও গত এক বছরে সেখানে অনিয়ন্ত্রিত লুটপাটের কারণে পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযানে নামতে বাধ্য করে।