প্রকাশিত : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২২:৫০ (মঙ্গলবার)
অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করলো ফ্রান্স-যুক্তরাজ্য

ছবি: সংগৃহীত।

ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে চলতি বছরের জুলাইয়ে সই হওয়া অভিবাসন সংক্রান্ত ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ চুক্তির আওতায় আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু হচ্ছে অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া। এর আওতায় ফরাসি উপকূল থেকে ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানো অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হবে ফ্রান্সে।

ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, প্রথম দফায় মাত্র কয়েকজনকে ফেরত পাঠানো হবে।

তিনি বলেন, এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে, প্রয়োজনে প্রক্রিয়া বন্ধও হতে পারে।

আগামী শনিবার থেকেই ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো শুরু হবে বলে জানিয়েছে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও জানিয়েছে, তাদের সীমান্ত রক্ষা করাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার, এবং খুব শিগগিরই প্রথম দলকে ফেরত পাঠানো হবে।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যে আটক হওয়া অনিয়মিত অভিবাসীদের ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হবে। এরপর ফরাসি অভিবাসন ও ইন্টিগ্রেশন দপ্তর তাদের স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরার প্রস্তাব দেবে।

যারা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করবেন এবং আশ্রয়ের আওতায় পড়বেন না, তাদের জন্য ‘অব্লিগেশন দ্য কুইটার লে টেরিতোয়ার’ (ওকিউটিএফ) বা ফ্রান্স ছাড়ার বাধ্যতামূলক নির্দেশ জারি হতে পারে।

ফরাসি অভিবাসন দপ্তরের মহাপরিচালক দিদিয়ে লেসচি বলেন, ‘আমরা চাই তারা সহায়তা গ্রহণ করে নিজ দেশে ফিরে যাক। তবে যারা রাজি হবে না, তাদের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।’

এই ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্য থেকে ফেরত পাঠানো প্রতি অভিবাসীর বিপরীতে ফ্রান্স থেকে নিয়মিত পথে আসা সমানসংখ্যক মানুষকে যুক্তরাজ্যে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

দুই দেশই একে সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় ভারসাম্য রক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই চুক্তির সমালোচনা করছে। তাদের মতে, এটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা শরণার্থীদের জন্য নিরাপদ পথ আরও সংকুচিত করবে।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩০ হাজার অভিবাসী ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটিতে পৌঁছেছেন- যা বছরের এই সময়ের সর্বোচ্চ সংখ্যা। শুধু গত সপ্তাহেই চ্যানেল পার হওয়ার সময় তিন জন অভিবাসী মারা গেছেন এবং আরও তিন জন নিখোঁজ রয়েছেন।

ফরাসি ও ব্রিটিশ সরকার বলছে, এই পাইলট প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ চ্যানেল পাড়ি দেওয়া রোধ করা এবং অন্যদিকে বৈধ পথে অভিবাসীদের প্রবেশ নিশ্চিত করা।

তবে অভিবাসনবিষয়ক সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে এবং ঝুঁকি বাড়বে।