প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১৯:২১ (বুধবার)
শ্রীমঙ্গলে দেশের একমাত্র নবদূর্গা পূজা শুরু

ছবি: সংগৃহীত।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শারদীয় দুর্গোৎসব এবার বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতি চা-বাগানের ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে শুরু হয়েছে দেশের একমাত্র নবদূর্গা পূজা।

এ আয়োজনের বৈশিষ্ট্য হলো- এখানে দেবী দুর্গার নয়টি রূপে টানা দশ দিনব্যাপী আরাধনা অনুষ্ঠিত হয়।

শারদীয় দুর্গোৎসবের ছয় দিন আগেই দেবীর আরাধনা শুরু হয় মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে। বৈদিক বিধান অনুসারে দেবীর নয় রূপ হলো- শৈলপুত্রী, ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্ধমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রি, মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী।

পূজার প্রথম দিন শৈলপুত্রী রূপে আরাধনা দিয়ে শুরু হয় পূজা, যা চলবে আগামী ২ অক্টোবর পর্যন্ত। বিজয়া দশমী ও প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মহোৎসব।

যখন সারা মৌলভীবাজার জেলায় প্রায় এক হাজার পূজামণ্ডপে প্রতিমা সাজানোর ব্যস্ততা চলছে, তখন শ্রীমঙ্গলের এই মন্দিরে ভক্তরা উপচে পড়া ভিড়ে অংশ নিচ্ছেন বিশেষ পূজায়।

মন্দিরের পুরোহিত দিপংকর ভট্টাচার্য বলেন, ‘নবদূর্গার এই পূর্জাচ্চনা সকল মানুষের জন্য শান্তি বয়ে আনবে। মা দুর্গার কৃপায় পৃথিবীর অশান্তি দূর হবে।’

ভক্তরাও জানান, নবদূর্গার আরাধনা তাঁদের আত্মিক শান্তি এনে দেয় এবং সামাজিক সম্প্রীতি জোরদার করে।

প্রায় পাঁচ শত বছর ধরে শ্রীশ্রী মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে পূজা হয়ে আসছে। তবে গত ১৫ বছর ধরে নিয়মিতভাবে এখানে নবদূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

পূজা কমিটির সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত দাস বলেন, ‘এই দেবস্থল আমাদের ঐতিহ্যের অংশ। এর স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা রক্ষায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তা প্রয়োজন।’

শারদীয় উৎসবকে ঘিরে শ্রীমঙ্গলের পরিবেশ এখন একেবারেই উৎসবমুখর। চলছে আলোকসজ্জা, ভক্তদের ভিড় আর ভোগ প্রসাদের আয়োজন। ধর্মীয় দিক ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আবহ এই পূজাকে করেছে অনন্য।

বাংলাদেশের ইতিহাসে নবদূর্গা পূজা একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। শ্রীমঙ্গলের প্রাচীন মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে দেবীর নয় রূপে পূজা কেবল ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, বরং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উজ্জ্বল প্রতীক।

আয়োজকদের প্রত্যাশা, ভবিষ্যতে সরকার ও সমাজের সহযোগিতায় এই আয়োজন আরও বৃহৎ আকারে ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে।