প্রকাশিত : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২১:০৮ (মঙ্গলবার)
অভিযানের প্রথম দিনে নগরীর রাস্তা থেকে অর্ধেক যানবাহন হাওয়া

ছবি: সংগৃহিত।

সিলেট মেট্রোপলিটন এলাকায় যানবাহনের শৃংখলা ফেরানো অভিযানের প্রথম দিনেই রাস্তা থেকে অর্ধেক যানবাহন উধাও হয়ে গেছে। এতে সারাদিন সিলেট নগরী ছিল যানজটমুক্ত। আজ (২২ সেপ্টম্বর) সকাল ৯টা থেকে এসএমপি পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের নেতৃত্বে কাগজপত্রহীন যানবাহন ধরতে অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সহায়তা করেছে র‌্যাব-৯।

এসএমপি পুলিশ জানিয়েছে, অভিযানের প্রথম দিন শেষে ৮৭টি অবৈধ গাড়ি আটক করা হয়েছে এবং কাগজপত্র না থাকায় ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

তিনি জানান, আটক করা ৮৭টি যানবাহনের মধ্যে রয়েছে ব্যাটারিচালিত রিকশা ৬৫টি, সিএনজি অটোরিকশা ৫টি, লেগুনা ১টি, মোটরসাইকেল ১৪টি, ট্রাক ১টি ও পিকআপ ১টি।

তিনি আরও জানান, প্রথম দিনের অভিযানে ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে সিএনজি অটোরিকশার বিরুদ্ধে ২টি, মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে ১১টি, প্রাইভেটকারের বিরুদ্ধে ২টি, পিকআপের বিরুদ্ধে ১টি ও ট্রাকের বিরুদ্ধে ১টি।

এর আগে সকাল থেকেই সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশার চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কাগজপত্রবিহীন সিএনজি অটোরিকশাও সারাদিন এসএমপি এলাকায় প্রবেশ করেনি। অন্যান্য হালকা যানবাহনও ছিল কড়া তল্লাশির মধ্যে। সে কারণে নগরীর মেন্দিবাগ, নাইওরপুল, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, রিকাবীবাজার, বন্দরবাজার, তালতলা, চৌহাট্টা এবং পাঠানটুলা এলাকায় পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়ে অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের কাগজপত্র চেক করা হয়। অভিযানের কারণে সোমবার নগরীর সড়কগুলোতে যানবাহন ছিল তুলনামূলকভাবে কম। ফলে চিরচেনা যানজটও ছিল না।

সকালে সিলেট মহানগর পুলিশ কমিশনার আবদুল কুদ্দুছ চৌধুরী বিভিন্ন পয়েন্ট ঘুরে অভিযান তদারকি করেন।

এসময় গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “অবৈধ যানবাহনগুলো নগর থেকে সরিয়ে নিতে আমরা আগে থেকেই সময় দিয়েছিলাম। গতকাল নগরীতে মাইকিংও করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছি।”

তিনি আরও বলেন, “সিলেট নগরে কোনো অবৈধ যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না। নগরের অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ডগুলো সরানোর ব্যাপারেও আমরা চিন্তা করছি। সিএনজির জন্য নির্ধারিত পার্কিং এলাকা ঠিক করে দেওয়া হবে।”

এর আগে গত সপ্তাহে এসএমপি সড়ক শৃঙ্খলা ফেরাতে পাঁচ দফা নির্দেশনা জারি করে। নির্দেশনায় বলা হয়, নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা, রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও ভুয়া নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। অনুমোদিত স্ট্যান্ড ছাড়া অন্য কোথাও অটোরিকশা পার্কিং করা যাবে না। এছাড়া মোটরসাইকেল চালক ও আরোহীকে হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তারও আগে এসএমপি কমিশনার জানিয়েছিলেন, নগরীর সম্মানিত নাগরিকদের ভোগান্তি কমানো এবং সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবেই নগরীতে অনুমোদনবিহীন, কাগজপত্র ছাড়া বা নিয়ম অমান্যকারী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না।

সন্ধ্যার পর র‌্যাব-৯ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সিলেট নগরীতে শৃঙ্খলা ফেরাতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৯) ও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) যৌথ অভিযান পরিচালনা করেছে। এসময় অবৈধ ৪৫টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও অন্যান্য ১১টি গাড়ি (পিকআপ, লেগুনা, সিএনজি)সহ মোট ৫৬টি গাড়ি আটক করা হয়।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত নগরীর পাঠানটুলা পয়েন্ট, হুমায়ুন রশিদ চত্বর ও নাইওরপুল এলাকায় এ অভিযান পরিচালিত হয়।