ছবি: সংগৃহীত।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখনো সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৬০তম অধিবেশনের ‘আইটেম ফোর জেনারেল ডিবেট’-এ ‘গ্লোবাল এক্সপ্রেশন রিপোর্ট’ শিরোনামে এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে মতপ্রকাশ ও তথ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদান অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য জরুরি।
রাজনৈতিক পরিবর্তন ও আইনগত সংস্কার
আর্টিকেল নাইনটিনের মতে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে গণ–অভ্যুত্থান এবং এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ রাজনৈতিক পুনর্গঠন ও ডিজিটাল আইনি কাঠামোয় বড় ধরনের সংস্কারের সুযোগ তৈরি করেছে।
যদিও সাইবার সিকিউরিটি আইন বাতিলকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানানো হয়েছে, তবুও নতুন খসড়া আইনগুলো মতপ্রকাশ, গোপনীয়তা ও অনলাইন অধিকারকে সীমিত করার ঝুঁকি তৈরি করছে। এর মধ্যে রয়েছে-
মতপ্রকাশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা,
অযথা কনটেন্ট মুছে ফেলা,
বেআইনি নজরদারি চালানো,
স্বচ্ছতার অভাব এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করা।
সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও দায়মুক্তি
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের পর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কার্যকর তদন্ত হয়নি। এটি বাংলাদেশে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হামলা ও হত্যার ক্ষেত্রে ‘সর্বব্যাপী দায়মুক্তির’ প্রতীক। একইভাবে ২০২৫ সালে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ও খন্দকার শাহ আলম হত্যার ঘটনাও দায়মুক্তির সংস্কৃতির দিকেই ইঙ্গিত করে।
আর্টিকেল নাইনটিনের দাবি, সাংবাদিকদের ওপর সব ধরনের হামলার জন্য দায়ীদের দ্রুত, স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
নারী সাংবাদিকদের বিশেষ ঝুঁকি
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে নারী সাংবাদিকেরা কর্মক্ষেত্রে হয়রানি থেকে শুরু করে অনলাইনে ধর্ষণের হুমকি এবং শারীরিক হামলার মতো নানা ঝুঁকির মুখোমুখি হন। একাধিক বৈষম্যের শিকার নারীদের জন্য এ ঝুঁকি আরও বাড়ে।
আহ্বান
সংস্থাটি বলেছে, খসড়া আইনসহ সামগ্রিক আইনি কাঠামোকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে হবে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব অপরাধের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।