ছবি: জেলা প্রশাসকের সামনের রাস্তা ও কার্যালয় ঘেরাও।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম, পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুস চৌধুরী ও সিটি কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগ আর সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় সিলেট নগরী যখন শৃঙ্খলার ফেরার পথে, তখন ব্যাটারিচালিত রিকশা ইস্যুতে সেই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থতার আকার দিতে রাজনৈতিক মদদে নতুন সংঘাতময় আন্দোলনের দিকে যাচ্ছে সিলেট। সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলনের আজকের দিনে এ লক্ষণ দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকের পরিচয়ে জড়ো হওয়া পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি হামলা চালায় সিলেট সিটি করপোরেশনে, হামলা ও ভাঙচুর করে সিএনজি অটোরিকশা এবং দুদফা জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও সামনের রাস্তা অবরোধ করে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেয়। এসব দাঙ্গাময় আন্দোলনে সরাসরি হকারদের অংশগ্রহণও দেখা যায়। তবে এসব কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংযত আচরণ করায়, যুদ্ধংদেহী আচরণ দাঙ্গায় রূপ নিতে পারেনি।

সকাল ১০টার দিকে নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হন পাঁচ শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বাঁশ ফেলে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন এবং আটক রিকশা ফেরতসহ নগরীর পাড়া-মহল্লায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা নয়াসড়কগামী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেন এবং একজন যাত্রীর ওপর হাত তোলেন। দুপুর ১২টার দিকে তারা মিছিল নিয়ে জিন্দাবাজার, কোর্ট পয়েন্ট হয়ে সিটি পয়েন্টে অবস্থান নেন। এ সময় তারা নগর ভবনের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং ভবনের প্রধান ফটকে ওঠারও চেষ্টা করেন।
এরপর তারা পুনরায় মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান এবং আটক রিকশা ফেরত, নীতিমালা প্রণয়ন করে লাইসেন্স প্রদান এবং নগরীর প্রধান সড়ক বাদ দিয়ে পাড়া-মহল্লায় রিকশা চালানোর দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আনোয়ারুজ্জামান।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় জরুরি কাজে বাইরে আছেন। আপনারা আশ্বস্ত থাকুন, এ বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং একটি সন্তোষজনক সমাধান আসবে।

অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ভাঙচুর বা হামলার কোনো লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি। কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, অনিবার্য কারণে বৃহস্পতিবার অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।
গত ২২ সেপ্টেম্বর থেকে মহানগর পুলিশ অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করে। তিন দিনে কয়েক শতাধিক যানবাহন আটক ও মামলা হয়। এ অভিযানের বিরুদ্ধেই ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের আন্দোলন শুরু হয়, যা বৃহস্পতিবার সংঘাতমুখর পরিস্থিতিতে গড়ায়।