সিলেটে রিকশা শ্রমিকদের সড়ক অবরোধে অরাজকতা, পুলিশের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৩১
                                                            ছবি: সংগৃহিত।
সিলেট নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকদের হঠাৎ সড়ক অবরোধে শহরে সৃষ্টি হয় চরম অরাজক পরিস্থিতি। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে চৌহাট্টা সড়ক অবরোধ করে রাখলেও পুলিশের কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চোখে পড়েনি।
এতে নাগরিক সমাজে উঠেছে তীব্র প্রশ্ন, কেন এই নীরবতা? মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এই অবরোধে পুরো নগরজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। অফিসগামী মানুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, এমনকি হাসপাতালে যাওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরাও পড়েন চরম ভোগান্তিতে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের এই আকস্মিক আন্দোলনের পেছনে রাজনৈতিক মদদের অভিযোগও উঠেছে।
গোপন সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের আগের রাতে নগরীর নেহারিপাড়ায় একটি বৈঠকে বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী বিরোধী একটি অংশ রিকশাশ্রমিকদের কর্মসূচিতে সমর্থন দেয়। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় তার বিরোধী পক্ষ শ্রমিকদের আন্দোলনে মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের ফলেই আন্দোলনটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ঘটনাস্থলে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। দিনভর সড়ক অবরোধ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দৃশ্যমানভাবে এগিয়ে আসেননি। প্রায় সাত ঘণ্টা চৌহাট্টা এলাকায় অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চললেও পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি, যা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
এর আগে গত ২৪ ও ২৫ সেপ্টেম্বরের আন্দোলনের সময় বাসদ নেতা আবু জাফর ও প্রণব পাল-কে গ্রেপ্তার করে এক মাস কারাভোগ করতে হয়েছিল। অথচ এবার একই ধরনের কর্মসূচি চলাকালেও কোনো গ্রেপ্তার বা কঠোর পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এতে নগরবাসী পুলিশের দ্বৈত নীতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে এসএমপিয উপকমিশনার (উত্তর) সাইফুল ইসলাম বলেন, 'পুলিশ নমনীয় নয়। অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতেই আমরা সংযমী ছিলাম।'
চৌহাট্টা, আম্বরখানা, জিন্দাবাজার ও কাজলশাহ সড়কে দীর্ঘ যানজটের কারণে নগরজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়ে। কর্মজীবী মানুষ সময়মতো অফিসে পৌঁছাতে পারেননি, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় দেরিতে পৌঁছায়, অসুস্থ রোগীদের বহনকারী যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে ছিল রাস্তায়।
                        
                        