
ছবি: সংগৃহিত।
যুক্তরাজ্যের আপিল কোর্ট লন্ডনের কাছের এপিং এলাকায় আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার জন্য হোটেল ব্যবহারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছে।
সরকারের যুক্তি ছিল, হোটেল বন্ধের নির্দেশ আশ্রয়প্রার্থীদের বিকল্প আবাসনের সক্ষমতায় গুরুতর প্রভাব ফেলবে এবং নতুন করে বিক্ষোভ উসকে দিতে পারে।
এ রায়কে ব্রিটিশ সরকারের জন্য আশ্রয়প্রার্থী ইস্যুতে প্রথম বড় আইনি সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কোর্ট জানিয়েছে, ১৯ আগস্ট দেওয়া নিষেধাজ্ঞা বাতিল হওয়ায় আশ্রয়প্রার্থীদের ওই হোটেলে রাখার প্রক্রিয়ায় আর কোনো বাধা থাকছে না।
রায়ে বলা হয়, হাইকোর্টের বিচারক একাধিক মৌলিক ভুল করেছিলেন এবং বিকল্প আবাসনের বাস্তবতা বিবেচনায় নেননি।
আদালত সতর্ক করেছে, যদি বিভিন্ন জেলা প্রশাসন একই সিদ্ধান্ত নিত, তবে তার প্রভাব ভয়াবহ হতো।
সরকার দাবি করেছে, হোটেল বন্ধ হলে আশ্রয়প্রার্থীদের বিকল্প খোঁজা কার্যত বিপর্যস্ত হতো।
তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে, এ ধরনের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা অন্য জায়গায়ও নজির তৈরি করতে পারে, যা সরকারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে।
স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, সংসদের বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই হোটেল-নির্ভর আবাসন ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য প্রায় ৪০০ হোটেল খোলা হয়েছিল, যার খরচ দাঁড়িয়েছিল দৈনিক ৯ মিলিয়ন পাউন্ড। বর্তমানে ১ লাখ ১১ হাজার আশ্রয়প্রার্থীর মধ্যে প্রায় ৩২ হাজারকে দুই শতাধিক হোটেলে রাখা হয়েছে।
তবে রায়ের বিরুদ্ধে নতুন করে বিক্ষোভ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় হোটেল ব্যবহার নিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে।
ব্রিটিশ রিফিউজি কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সোলোমন বলেন, যতদিন হোটেল খোলা থাকবে, ততদিন এগুলো বিক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হবে এবং আশ্রয়প্রার্থীরা অনিরাপদ বোধ করবে।
তার মতে, ’২০২৯ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা কোনো সমাধান নয়।’
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদন জমা পড়েছে ১ লাখ ১১ হাজার, যা ২০০১ সালের পর সর্বোচ্চ।
এদিকে সমুদ্রপথে আসার সংখ্যাও রেকর্ড ছুঁয়েছে।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ছোট নৌকায় করে ২৮ হাজারের বেশি মানুষ ব্রিটেনে পৌঁছেছেন, যা গত বছরের তুলনায় ৪৬ শতাংশ বেশি।
সব মিলিয়ে আপিল কোর্টের এই রায় সরকারকে সাময়িক স্বস্তি দিলেও অক্টোবরে আবারও বেল হোটেল স্থায়ীভাবে বন্ধের বিষয়ে আদালতে শুনানি হবে। তখন সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে।