বিএনপির নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (২২ জুন) ঢাকার উত্তরায় নিজ বাসা থেকে জোরপূর্বক বের করে এনে একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি তাকে লাঞ্ছিত করেন। ঘটনাস্থলে তাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে, মুখে জুতা দিয়ে আঘাত করা হয় এবং শরীরে ডিম ছোড়া হয়। হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘটনার পরপরই তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। পরে রাতে বিএনপির একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

ঘটনার সঙ্গে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হামলাকারীরা নিজেরাও এমন পরিচয় দিয়েছেন। যদিও বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘটনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে চায়, কিন্তু দলের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের রাজনৈতিক পরিচয় পুরোপুরি অস্বীকার করা হয়নি। এতে দলটির ভূমিকা ও অবস্থান নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম হয়েছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, 'এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দল হিসেবে বিএনপির এর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এ ধরনের কর্মকাণ্ড সমর্থন করি না। যদি দলের কেউ জড়িত থাকে, তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সাইফুল আলম চৌধুরী মন্তব্য করেছেন, 'সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে এবং কখনো কখনো মব সন্ত্রাসকে পরোক্ষভাবে উৎসাহ দিয়েছে। এর ফলেই রাজনৈতিক সহিংসতা বেড়েই চলেছে।'

মানবাধিকার সংগঠক নূর খান লিটন বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরেই এমন দলবদ্ধ সহিংসতা চলছে। এর দায় সরকার এড়াতে পারে না। বিচারব্যবস্থা ও আইনের শাসনকে পাশ কাটিয়ে এ ধরনের অসভ্যতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

এই ঘটনার পর সাধারণ মানুষের মাঝে গণতন্ত্র, রাজনৈতিক সহিষ্ণুতা এবং আইনের শাসন নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, এ ধরনের ‘মব সন্ত্রাস’ রাজনীতির জায়গা নয় এবং এটি দেশের ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার জন্য বিপজ্জনক।