🚀 পরীক্ষামুলক প্রকাশনা!

https://www.emjanews.com/

6585

surplus

প্রকাশিত

২৫ জুন ২০২৫ ২২:১৫

অন্যান্য

১৫ কোটি বছর আগের রাতে

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫ ২২:১৫

ছবি- গুগল

রাতের গভীরে, জুরাসিক যুগের অরণ্যে যখন চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়ত অতিকায় স্টেগোসরাসের কাঁটায় কাঁটায়, ঠিক তখনই ছায়ার মতো পিছনে পিছনে চলত এক অদ্ভুত প্রাণী। সে বড় ছিল না, ভয়ংকর দাঁত-নখও ছিল না। অথচ তার উপস্থিতি টের পাওয়া যেত-একটা ঝুপ করে শব্দ, এক ঝলক দৌড়, আর অজানা এক ছায়া।

সে প্রাণীর নাম এখন আমরা জানি: এনিগমাকারসর।

নতুন প্রজাতির এই ডাইনোসরের নামকরণ করা হয়েছে এনিগমাকারসর-লাতিন ও গ্রিক মিলিয়ে যার মানে দাঁড়ায় -একটা রহস্যময় দৌড়ে বেড়ানো প্রাণী।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আজকের দিনে কেউ যদি তাকে দেখতে পেত, হয়তো ল্যাব্রাডর কুকুর বলে ভুল করত! কিন্তু আদতে সে ছিল এক হারিয়ে যাওয়া যুগের ছায়াময় প্রতিনিধি-বিবর্তনের গল্পের এক ছোট্ট ভূতের মতো চরিত্র।

লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে আজ থেকে শুরু হচ্ছে এক রহস্যময় প্রদর্শনী। বিশাল স্টেগোসরাস ‘সোফি’র নিচে, কাচের বাক্সে ঠাঁই পেয়েছে এনিগমাকারসরের কঙ্কাল। যেন সময়ের চক্রে আজও সে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার প্রাগৈতিহাসিক প্রভুর পায়ের তলায়-নীরব, অদৃশ্য, কিন্তু উপস্থিত।

জাদুঘরের জীবাশ্মবিদ অধ্যাপক পল ব্যারেট বলেন, ‘এনিগমাকারসর বিবর্তনের শুরুর অধ্যায়ের এক প্রতীক। ছোট থেকেই শুরু হয়েছিল, পরে তারা হয়ে উঠেছিল বিশাল আকৃতির ‘জন্তু দানব’। এই ছোট প্রাণীর ভেতরেই ছিল ভবিষ্যতের রাক্ষসের ছায়া।’

২০১৪ সাল থেকে ‘সোফি’ ছিল জাদুঘরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় কঙ্কাল। কিন্তু এবার সেই স্টেগোসরাসের নিচে স্থাপন করা হল তার এক সময়কার সঙ্গী, অনুসরণকারী, বা হয়তো ছায়া-এনিগমাকারসর।

একটা তীব্র বাতাস বইলেই গুঞ্জন ওঠে ‘সোফি’র নিচে কে নড়ে উঠল?’

ভিজিটরদের অনেকেই বলেন, সন্ধেবেলা ‘আর্থ হল’-এ দাঁড়িয়ে থাকলে মনে হয়, কেউ যেন পেছন থেকে দৌড়ে চলে যাচ্ছে... ছোট পায়ের শব্দ হয়তো আজও কাচের বাক্স পেরিয়ে সময়ের সীমা ভেঙে ফিরে আসে...

এনিগমাকারসর শুধু আর এক অজানা প্রজাতি নয়। সে যেন এক চলমান ছায়া। প্রকৃতির ভাঁজে হারিয়ে যাওয়া সময়ের রেকর্ড। তার হাঁটার শব্দ নেই, কিন্তু তার অস্তিত্বের প্রতিধ্বনি রয়েছে স্টেগোসরাসদের পায়ের তলায়, আজও, আজকের লন্ডনের মিউজিয়ামে।

এক সময়ে তারা দৌড়ত জীবনের খেলার মাঠে। আজ তারা দাঁড়িয়ে সময়ের কাচের ঘরে। দেখুন, ভাবুন... এবং কল্পনায় শুনুন সেই ছোট্ট পায়ের পদচারণা। যা হয়তো কখনও থামেইনি...