
ছবি: মা শারমিন আক্তার ও বাবা জহুরুল হাসানের সঙ্গে কন্যা লুৎফা শাজনীন হাসান
সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিক জহুরুল হাসানের কন্যা লুৎফা শাজনীন হাসান সম্প্রতি নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (এনটিইউ) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। শাজনীন বলেন, ‘আমি সবসময় একজন সিঙ্গাপুরী-বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করব।’
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ থেকে সিঙ্গাপুরে আসা জহুরুল হাসান ২০০৬ সালে পরিবারের সঙ্গে নাগরিকত্ব পান। পিতার সংগ্রামের গল্প শাজনীনকে অনুপ্রাণিত করেছে অভিবাসী ইতিহাসে পড়াশোনা করতে এবং সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করতে।
২৩ বছর বয়সী শাজনীন বর্তমানে সিঙ্গাপুরের মাইগ্রেন্ট ওয়ার্কার্স সেন্টারে সিনিয়র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছেন। তিনি বিদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান, সামাজিক ও কল্যাণমূলক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা দেন, যার মধ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত মামলার সমাধান, সরকারি সংস্থা ও দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ এবং অধিকার সংক্রান্ত সহায়তা প্রদান।
শাজনীন ‘স্টোরিজ ফ্রম স্যাটারডে স্কুল’ নামে একটি পডকাস্ট চালু করেছেন, যেখানে তিনি অভিবাসী সম্প্রদায় এবং শ্রমিকদের গল্প তুলে ধরছেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের সমাজে অভিবাসী শ্রমিকদের অবদান ও মানবিক চ্যালেঞ্জগুলো সমাজের সামনে আনা হচ্ছে।
সিঙ্গাপুর ম্যানপাওয়ার ইনস্টিটিউটের শ্রমনীতি বিশ্লেষক ড. এডউইন তান বলেন, ‘শাজনীনের মতো উদ্যোগ শ্রমিকদের মানবিক দিক তুলে ধরে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’
সিঙ্গাপুরে বর্তমানে প্রায় ১০ লাখের বেশি অভিবাসী শ্রমিক কাজ করছে, যারা মূলত নির্মাণ, জাহাজ নির্মাণ, গৃহকর্ম ও পরিষেবা খাতে নিযুক্ত। সরকার কঠোর নিয়ম প্রয়োগ করলেও, শাজনীনসহ তরুণদের উদ্যোগ শ্রমিকদের মানবিক গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে আসছে।