ইসরাইলে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের বিরুদ্ধে ইহুদিদের বিক্ষোভ
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৯:৫৫
                                                            ছবি: সংগৃহীত।
ইসরাইলে বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের প্রতিবাদে প্রায় দুই লাখ অতিআর্থডক্স (হারেদি) ইহুদি বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানী জেরুসালেমের প্রধান প্রবেশপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে।
‘মিলিয়ন ম্যান প্রোটেস্ট’ নামে এই বিশাল সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ এবং সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। খবর দিয়েছে দ্য টাইমস অব ইসরাইল।
বিক্ষোভ চলাকালে শহরের কেন্দ্রস্থলে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক ২০ বছর বয়সি তরুণের মৃত্যু হয়। হিব্রু গণমাধ্যমে নিহতের নাম মেনাখেম মেনডেল লিটজম্যান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এটি আত্মহত্যা কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে।
আয়োজকদের ভাষ্যমতে, এটি ছিল একটি ‘প্রার্থনা সমাবেশ’, তবে বাস্তবে এটি ইসরাইলের বিভিন্ন অতিআর্থডক্স সম্প্রদায়ের বিরল ঐক্য প্রদর্শন। সাধারণত এসব সম্প্রদায় নিজেদের মধ্যে সীমিত থাকলেও এই বিক্ষোভ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বৃহত্তম গণসমাবেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
বিক্ষোভের কয়েক ঘণ্টা আগে শহরের পশ্চিম প্রাচীর এলাকায় ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) নতুন হারেদি ব্রিগেডের রিজার্ভ সদস্যদের প্রশিক্ষণ সমাপনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়, যা এই আন্দোলনের সঙ্গে সুস্পষ্ট বৈপরীত্য তৈরি করে।
প্রায় দুই হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও বিক্ষোভের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কিছু বিক্ষোভকারী সরাসরি সম্প্রচারে থাকা এক নারী সাংবাদিকের দিকে বোতল নিক্ষেপ করেন এবং পথচারীদের হয়রানি করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করে জনতা ছত্রভঙ্গ করে। নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর আয়োজকরা দ্রুত সমাবেশ স্থগিতের ঘোষণা দেন।
বিক্ষোভের মূল কারণ ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে অতিআর্থডক্স পুরুষদের বাধ্যতামূলক নিয়োগের সরকারি পরিকল্পনা ও নতুন খসড়া আইনের বিরুদ্ধে অসন্তোষ।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেনা নিয়োগ এড়ানো ৮৭০ জন হারেদি যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা মোট তালিকাভুক্ত প্রায় সাত হাজার খসড়া এড়ানো ব্যক্তির মাত্র ৭ শতাংশ।
বিতর্কের সূত্রপাত ২০২৩ সালের জুনে, যখন নিরাপত্তা পরিষেবা আইনের একটি ধারা অনুযায়ী হারেদি যেশিভা শিক্ষার্থীদের জন্য থাকা সামরিক সেবার ছাড়ের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
পরের বছর ইসরাইলের উচ্চ আদালত রায় দেয়, সরকারকে হারেদি যুবকদেরও সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দিতে হবে।
তবে এখন পর্যন্ত অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থীই সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন কোনো নিয়োগ আইন পাশ হলে হারেদি রাজনৈতিক দল শাস ও ইউনাইটেড টোরাহ জুডেইজমের বিরোধিতার কারণে সরকারের জোট ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই দীর্ঘদিন ধরে এ ইস্যুতে অচলাবস্থা চলছে।
                        
                        