ই রা ন
পারমাণবিক স্থাপনায় প্রবেশ করতে চায় আইএইএ
মহাপরিচালক রাফায়েল শান্তির আহ্বান গ্রোসির
প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫ ১৯:৫২

ছবি- বিবিসি
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনার মধ্যেই আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) সোমবার ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোয় তাদের পরিদর্শকদের পুনরায় প্রবেশের অনুমতি চেয়েছে।
সংস্থার মতে, উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুতের সঠিক হিসাব রাখা এবং এনপিটি (পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি) অনুযায়ী দায়িত্ব পালনের জন্য এটি জরুরি।
ভিয়েনায় আইএইএর জরুরি বোর্ড সভায় সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি বলেন, ইরান, ইসরাইল ও গোটা মধ্যপ্রাচ্যে এখন শান্তির প্রয়োজন। এই শান্তি অর্জনে তাৎক্ষণিক কিছু পদক্ষেপ প্রয়োজন।
তিনি বলেন, 'প্রথমত দরকার আলোচনায় ফেরা। আর সে জন্য আমাদের পরিদর্শকদের ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। বিশেষ করে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ প্রায় ৪০০ কেজি ইউরেনিয়ামের সুনির্দিষ্ট হিসাব নেওয়া এখন জরুরি।'
তবে গ্রোসি জানান, ১৩ জুন ইরান একটি চিঠিতে জানিয়েছে যে, ‘পরমাণু উপকরণ ও যন্ত্রপাতির সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা’ নিয়েছে তারা। বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে পরিদর্শকদের প্রবেশ এখনই সম্ভব নয় বলে জানায় তেহরান।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল একযোগে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। বিশেষ করে ফোরদো স্থাপনায় ‘গ্রাউন্ড-পেনিট্রেটিং বোমা’ ব্যবহৃত হয়েছে, যা ভূগর্ভস্থ সংবেদনশীল সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রপাতিতে বড় ধ্বংস ডেকে আনতে পারে বলে জানান গ্রোসি।
তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আইএইএসহ কেউই ফোরদো স্থাপনায় সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা নির্ণয় করতে পারেনি।
গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক নেতৃত্ব ও আবাসিক এলাকায় ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়, যার জবাবে ইরানও পাল্টা হামলা শুরু করে। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে সরাসরি যুক্ত হয়।
পশ্চিমা বিশ্ব বহু বছর ধরেই ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের আশঙ্কা, ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায়। যদিও ইরান বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েল কখনোই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডারের অস্তিত্ব স্বীকার বা অস্বীকার করেনি। তবে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (SIPRI) হিসাবে, ইসরায়েলের কাছে বর্তমানে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে।
ইউরোপীয় শক্তিগুলো ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রকে আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে তেহরান জানিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ বন্ধ না হলে তারা কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফেরার সম্ভাবনা বিবেচনায় নেবে না।