বদরুদ্দীন উমরের প্রতি শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শেষ শ্রদ্ধা
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:২৭
ছবি: সংগৃহীত।
দেশের প্রখ্যাত বামপন্থী চিন্তাবিদ, সমাজতান্ত্রিক ভাবুক, গবেষক ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের প্রতি রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছে। সোমবার সকালে তাঁর মরদেহ সেখানে নেওয়া হলে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয়।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ সময় ফুল দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা জানানোর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ, ফরিদা আখতার, মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ নেওয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে। সেখানে বাদ জোহর জানাজা শেষে জুরাইন কবরস্থানে মা-বাবার পাশে তাঁকে দাফন করা হবে।
গতকাল রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে বদরুদ্দীন উমর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। মৃত্যুর আগে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
সংক্ষিপ্ত জীবনী
১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায় বদরুদ্দীন উমরের জন্ম। তাঁর বাবা আবুল হাশিম ছিলেন অখণ্ড ভারতের খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক। মা ছিলেন মেহের বানু বেগম। দেশভাগের পর পরিবারসহ তিনি ঢাকায় আসেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৫৪ সালে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৫৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন এবং ১৯৬৩ সালে সেখানে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে পিপিই ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬৮ সালে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রতিবাদে শিক্ষকতা ছেড়ে পুরোপুরি রাজনীতি ও লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। তাঁর প্রথম গ্রন্থ সাম্প্রদায়িকতা প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে, যা ব্যাপক আলোড়ন তোলে। ভাষা আন্দোলন ও রাজনীতির ওপর তাঁর গবেষণা গ্রন্থ পূর্ব বাঙলার ভাষা আন্দোলন ও তৎকালীন রাজনীতি আজও এক অমূল্য দলিল হিসেবে বিবেচিত।
বদরুদ্দীন উমর একসময় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটিতে ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী জোটের সমন্বয়ক এবং পরবর্তীতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।
