https://www.emjanews.com/

9251

national

প্রকাশিত

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৫

আপডেট

০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৫২

জাতীয়

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট ও বিশেষ আদেশের পথে ঐকমত্য কমিশন

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৫৫

ছবি: সংগৃহীত।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য একাধিক বিকল্প পদ্ধতি বিবেচনা করছে। কিছু ক্ষেত্রে গণভোট, কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়নের সুপারিশ করার কথা ভাবা হচ্ছে। বিশেষত সংসদের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (PR) চালুর বিষয়ে গণভোটের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

কমিশন সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের মতামত সমন্বয় করেই চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করা হবে। এ লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবার বৈঠক হবে। এরপর আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দল ও সরকারের কাছে চূড়ান্ত জুলাই সনদ ও বাস্তবায়নপদ্ধতি একসঙ্গে পাঠানো হবে। তবে বাস্তবায়নপদ্ধতি সনদের অংশ হিসেবে গণ্য হবে না।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন,‘কমিশন জুলাই সনদের চূড়ান্ত রূপ দাঁড় করিয়েছে। এখন বাস্তবায়নের উপায় কী হতে পারে, তা নিয়ে আমরা পরামর্শ দেব। চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ হলে সনদ ও বাস্তবায়নপদ্ধতি একসঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে।’

জুলাই জাতীয় সনদ তিন ভাগে সাজানো হচ্ছে- ১. পটভূমি, ২. রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যে আসা ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব, ৩. বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামা।

বাস্তবায়নপদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার  সংবিধান-সম্পর্কিত নয়, এমন সংস্কারগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। বিএনপি  তিন ধাপে বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। সংবিধান-সংক্রান্ত সংস্কারগুলো নির্বাচনের পরবর্তী সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে সম্পন্ন করার পক্ষে তারা লিখিত মত দিয়েছে। তাদের মতে, বিদ্যমান সংবিধানের ওপর জুলাই সনদকে প্রাধান্য দেওয়ার চেষ্টা অসংগত। জামায়াতে ইসলামী  গণভোট বা রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশনের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)  গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চায়।

আর বিশেষজ্ঞরা  সংবিধান সংস্কার বিষয়ে গণভোট, রাষ্ট্রপতির প্রোক্লেমেশন, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ, এমনকি উচ্চ আদালতের রেফারেন্স নেওয়ার মতো বিকল্প মতামত দিয়েছেন।

উচ্চকক্ষ গঠনে অধিকাংশ দল একমত হলেও নির্বাচনপদ্ধতি নিয়ে বিভাজন রয়েছে। জামায়াত, এনসিপি ও আরও কয়েকটি দল সংখ্যানুপাতিক (PR) পদ্ধতির পক্ষে। বিএনপি চাইছে নিম্নকক্ষে যত আসন পাওয়া যাবে, তার ভিত্তিতে উচ্চকক্ষে আসন নির্ধারণ করা হোক। এই জটিলতা নিরসনে গণভোটের কথা ভাবা হচ্ছে।

প্রাথমিক খসড়ায় তিনটি বিষয়ে বিএনপির আপত্তি ছিল, সেগুলো হলো- সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়া, সনদের বৈধতা আদালতে প্রশ্ন করা যাবে না, সনদের ব্যাখ্যার দায়িত্ব সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকবে।

কমিশন সূত্র জানায়, এসব বিষয়ে ভাষাগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যেমন- সনদকে সরাসরি সংবিধানের ওপর প্রাধান্য না দিয়ে, বাস্তবায়নের পর তা সংবিধানের অংশ হবে। বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হলে স্বাক্ষরকারী দলগুলো সনদকে আইনি ও সাংবিধানিকভাবে রক্ষা করবে।

আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত সনদ

কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত বিশ্লেষণের পর আগামী সপ্তাহেই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক হবে। এরপর জুলাই জাতীয় সনদ ও বাস্তবায়নপদ্ধতি চূড়ান্ত আকারে দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।