জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করবে ঐকমত্য কমিশন
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৩৩
ছবি: সংগৃহীত।
জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামী বৃহস্পতিবার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৈঠকের পর কমিশন তাদের সুপারিশ রাজনৈতিক দল ও সরকারের কাছে পাঠাবে।
সনদ ও বাস্তবায়নের প্রেক্ষাপট
আগে দুই পর্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন-সংক্রান্ত মোট ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এসব প্রস্তাবের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছে জুলাই জাতীয় সনদ, যার খসড়া ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। মূলত বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধের কারণেই সনদ সই বিলম্বিত হয়েছে।
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মতভিন্নতা
সংবিধানসংক্রান্ত সংস্কার বাস্তবায়নের বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ভিন্ন মত রয়েছে। বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী বলছে, রাষ্ট্রপতির প্রক্লেমেশন বা গণভোটের মাধ্যমে সংস্কার কার্যকর করা উচিত। অপরদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গণপরিষদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। এছাড়া অন্তত ১০টি দল সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে মত দিয়েছেন-রাষ্ট্রপতির বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে সংবিধানসংক্রান্ত প্রস্তাব বাস্তবায়ন সবচেয়ে কার্যকর বিকল্প হতে পারে। আর অন্যান্য প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা সম্ভব অধ্যাদেশ ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে।
কমিশনের অবস্থান
ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘জুলাই সনদ ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে দলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে জানে না, বিশেষজ্ঞদের মতামতও জানে না। তাই সব প্রস্তাব উপস্থাপন করে আলোচনা করা হবে। কমিশন সুপারিশ দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছ থাকতে চায়।’
সূত্র জানায়, একসঙ্গে ৩০টি রাজনৈতিক দলকে আলোচনায় নেওয়া হবে। প্রয়োজনে একাধিক দিন বৈঠক হতে পারে। আলোচনায় বিশেষজ্ঞদেরও রাখা হবে, যাতে ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে তাঁরা মত দিতে পারেন।
সাম্প্রতিক কার্যক্রম
এরই মধ্যে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একাধিক অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছে কমিশন এবং লিখিত মতামত সংগ্রহ করেছে। গত রোববার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকের পর সোমবার কমিশনের অভ্যন্তরীণ সভায়ও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন ও মো. আইয়ুব মিয়া। এছাড়া ঐকমত্য প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারও অংশ নেন।
